সংক্ষিপ্ত

বুধবার পিংলার ঘটনায় দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে পুলিশ সুপারের অফিসে ডেপুটেশন দেয় রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী। যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। 

রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসছে। শুধু বদলে যাচ্ছে জায়গাগুলি। কখনও মাটিয়া, কখনও ইংরেজবাজার, আবার কখনও রায়গঞ্জ, বোলপুর, কাকদ্বীপের পর এবার পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা। সেখানে বিশেষভাবে সক্ষম যুবতীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় গ্রেফতার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁকে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। সেইসঙ্গে নির্যাতিতা আদালতে নিজের জবানবন্দিও দিয়েছেন। আর রাজ্যে রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসায় ও তার সঙ্গে শাসকদলের কোনও না কোনও সদস্যের যুক্ত থাকার ঘটনা সামনে আসায় কিছুটা ব্যাকফুটে তৃণমূল। আর এবার পিংলার এই ঘটনাকে কেন্দ্র তৃণমূলকে একহাত নিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।  

বুধবার পিংলার ঘটনায় দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে পুলিশ সুপারের অফিসে ডেপুটেশন দেয় রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী। যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিকে পুলিশ সুপারের অফিসে প্রবেশ করার সময় রক্ষীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায়। সেখান থেকে জেলাশাসকের দফতরের সামনেও বিক্ষোভ সভা করেন তাঁরা। 

আরও পড়ুন- আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বিগ্ন, আজই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চেয়ে চিঠি রাজ্যপালের

পিংলায় কী হয়েছিল? 
পিংলার পিণ্ডরুই গ্রামের বিশেষভাবে সক্ষম যুবতী বাসন্তী পুজোর মেলা উপলক্ষে দিদির বাড়ি গিয়েছিলেন কালুখাঁড়া গ্রামে। রাতে এক আত্মীয়ার সঙ্গে পুকুর পারে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই ঘটে সেই ঘটনা। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে যুবতীকে মুখ চেপে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এদিকে ঘটনায় প্রথমে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। রাতে সালিশি সভা ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য নির্যাতিতার পরিবারের উপর চাপ দেওয়া হয়। পুলিশ ধর্ষণের পরিবর্তে পাশবিক অত্যাচার লিখতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

 

 

তবে নানা টানাপোড়েনের পর মঙ্গলবার পিংলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারে পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে। তাঁকে এদিন মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়। মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানি এবং ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আর এনিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। 

আরও পড়ুন- '৯৩ শতাংশ মহিলা নিজের পরিবারেই নিরাপদ নন', হাঁসখালি নিয়ে মমতার মন্তব্যের ব্যাখ্যা সুখেন্দুর

টুইট করে সৌমিত্র লেখেন, "পিংলায় এক বিশেষভাবে সক্ষম যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু, ধর্ষণের পরিবর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতের পুতুল পুলিশ সেই ঘটনাকে পাশবিক অত্যাচার বলে উল্লেখ করেছে। এবারও কি মুখ্যমন্ত্রী বলবেন যে ওই যুবতী গর্ভবতী ছিলেন বা তাঁর লাভ অ্যাফেয়ার ছিল?" উল্লেখ্য, হাঁসখালি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তা নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। আসলে মৃত ১৪ বছরের কিশোরী গর্ভবতী ছিল কিনা, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল নাকি কোনও প্রেমঘটিত সম্পর্ক ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। আর তাঁর মন্তব্য আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে।