সংক্ষিপ্ত

এই চিকিৎসকদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ বা ১২০০ জন চিকিৎসক অন্তত এক যুগ ধরে একই হাসপাতালে কাজ করছেন। তার মধ্যে একাধিকবার তাঁদের কাছে বদলির নির্দেশ এসেছে। কিন্তু, কোনও না কোনও কারণে সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। 

প্রভাব খাটিয়ে প্রায় সব কিছুই সম্ভব। আর এই প্রভাব খাটিয়েই একই হাসপাতালে (Hospital) ও স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) অফিসে বছরের পর বছর ধরে চাকরি করছিলেন বহু চিকিৎসক। এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। কিন্তু, সেই প্রভাব আর কাজে দেবে না। আর পাঁচটা সরকারি দফতরে যে নীতিতে কর্মী বদলি হয়, স্বাস্থ্যদফতরেও তার কোনও অন্যথা হবে না বলে জানানো হয়েছে। বছরের পর বছর একই হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য দফতরের অফিসে থাকতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে। আর এই নিয়ম পালন করতে গিয়েই এবার প্রায় ৬ হাজার চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে।

এই চিকিৎসকদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ বা ১২০০ জন চিকিৎসক অন্তত এক যুগ ধরে একই হাসপাতালে কাজ করছেন। তার মধ্যে একাধিকবার তাঁদের কাছে বদলির নির্দেশ এসেছে। কিন্তু, কোনও না কোনও কারণে সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একই হাসপাতালে থেকে গিয়েছেন বহু চিকিৎসক। তবে এবার সেই অনিয়মে দাঁড়ি পড়তে চলেছে। কোমর বেঁধেছে স্বাস্থ্যদফতর। 

আরও পড়ুন- জগদ্ধাত্রী পুজোয় ভিড় মণ্ডপে, হুগলিতে শিথিল নাইট কারফিউ

মেডিক্যাল কলেজ থেকে ব্লক হাসপাতাল, কোথায় কোন চিকিৎসক কত দিন ধরে একই পদে কাজ করছেন, কতজন পদোন্নতি নিতে চাননি, এ সব তথ্য গত চার মাস ধরে পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও স্বাস্থ্যকর্তাদের একটি বিশেষ দল যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে চোখ বুলিয়ে মাথায় হাত স্বাস্থ্যভবনের। 

জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০০ জন চিকিৎসক একই পদে বহাল থেকেছেন বছরের পর বছর। তবে এবার তাঁদের ব্যাপারে কড়া হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। কোথাও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, কোথাও আবার ভিতরে কলকাঠি নেড়ে বদলির নির্দেশকে এড়িয়ে গিয়েছেন তাঁরা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে উত্তরবঙ্গে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তা তাঁরা এড়িয়ে গিয়েছেন। আর এবার তাঁদের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

আরও পড়ুন- নিয়ম ভেঙে একই হাসপাতালে বহু বছর, ৬ হাজার চিকিৎসকে বদলির সিদ্ধান্ত

রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "চিকিৎসকদের স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে রাজ্য সরকার অত্যন্ত সংবেদনশীল। কিন্তু তাঁদেরও সরকারি নিয়ম মানতে হবে। মালবাজার থেকে বারুইপুর আসতে অনেকেই রাজি। কিন্তু, মালবাজারে পোস্টিং নেওয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম। চিকিৎসকরা এমন করলে তাহলে মালবাজারের রোগীরা কোথায় যাবেন।"

আরও পড়ুন- রাজ্যে কমছে শীত শীত আমেজ, বাড়ছে তাপমাত্রা

স্বাস্থ্যভবনের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ১৪টি মেডিক্যাল কলেজে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও টেকনিশিয়ান মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার পদ রয়েছে। কয়েকটি পদ ফাঁকা থাকলেও মেডিক্যাল পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে তেমন কোনও সমস্যা হচ্ছে না। আবার আরএমও (রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার) থেকে সিনিয়র চিকিৎসক মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার চিকিৎসক কর্মরত। সব মিলিয়ে প্রায় কুড়ি হাজারের বেশি চিকিৎসক স্বাস্থ্যদফতরে নিযুক্ত। কিন্তু, তাঁদের মধ্যে অনেকেই এতদিন নিময়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একই জায়গায় কাজ করে চলেছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের নয়া সিদ্ধান্তের ফলে অবশেষে তাঁদের সেই অনিয়মে দাঁড়ি পড়তে চলেছে বলে আশা করছেন অনেকেই। 

YouTube video player