সংক্ষিপ্ত
- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মন্ত্রীর উপরে প্রাণঘাতী হামলা
- গুরুতর জখম রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন
- রাতেই গুরুতর জখম মন্ত্রীকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়
- মন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কয়েক জন সঙ্গীও এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেনa
পরাগ মজুমদার, প্রতিনিধি, মুর্শিদাবাদ-- বোমা নিক্ষেপ করে হত্যার চেষ্টা রাজ্যের শ্রম দফতরের মন্ত্রী জাকির হোসনকে। গুরুতর জখম অবস্থায় জাকির হোসনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় জাকিরের কয়েক জন সঙ্গীও জখম হয়েছেন। তাঁদেরও এসএসকেএম-এ নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের নিমতিতা স্টেশনে। খোদ মন্ত্রীর উপরে এই প্রাণঘাতী হামলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকেই আঙুল উঠেছে। যদিও, বিজেপি-কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ২০২১-এর আগে মুর্শিদাবাদে ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে শাসক দল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বুধবার রাতে এই গোষ্ঠীদ্বন্ধ এবার চরমে পৌঁছল বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার রাতে জঙ্গীপুর মহকুমার অন্তর্গত নিমতিতা স্টেশন থেকে কলকাতায় দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য প্লাটফর্মে দেহরক্ষী ও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন রাজ্যের শ্রমদপ্তর এর প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আর সেই সময় মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে জোরালো শক্তিশালী বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় অভিযোগের তীর মন্ত্রীর বিরোধী গোষ্ঠীর দিকেই বলে তার সমর্থকরা দাবি করেছেন। বোমা নিক্ষেপে পর চারপাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। হামলার আকস্মিতা কাটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রতিমন্ত্রীকে। তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে আরও ৮ থেকে ১০ জন স্প্লিন্টারের আঘাতে জখম হন। বিকট আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি আশেপাশের অন্যান্য লোকজন থেকে শুরু করে রেলওয়ে পুলিশ ছুটে আসে সেখানে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় প্রতিমন্ত্রী ও তাঁর সমর্থকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই প্রাথমিকভাবে সকলের চিকিৎসা শুরু হয়। জাকির হোসেনের বুক ও মাথার বেশ কিছু অংশ সেইসঙ্গে হাঁটু ও তার নীচে একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় বোমের আঘাতে। ১৪ টি সেলাই করা হয় প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের শরীর জুড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরই গোটা রাজনৈতিক মহল জুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সংসদ তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি আবু তাহের খান বলেন,' কংগ্রেস সিপিএম ও বিরোধী বিজেপি মিলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। দ্রুত পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করা হবে।' শেষ পাওয়া খবরে মন্ত্রীকে বোমা নিক্ষেপ করে প্রাণে মারার চেষ্টায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে বোমার স্প্লিন্টার সহ একাধিক নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ। সেইসঙ্গে মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে,'এখনই কিছু বলা সম্ভব নয় তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পুলিশ সেই সঙ্গে ফরেনসিক টিম এসে পুরো পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট জমা দেবে।' যদিও এই ঘটনায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক সচিব জয়ন্ত দাস তীব্র সমালোচনা করে বলেন,'রাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছু নেই যে কারণে একজন মন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদের সজ্জন ব্যবসায়ীকেও তাঁরই দলের বিরোধী গোষ্ঠী লোকেরা এইভাবে প্রকাশ্যে প্রাণে মারার চেষ্টায় বোমা নিক্ষেপ করেছে।'