সংক্ষিপ্ত
প্রথমদিকে খবর আসে আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। কিন্তু ঘড়ির কাঁটার হাত ধরে বাড়তে শুরু করে মৃতের পরিমান। দমকলের হিসাব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দশজনের।
সোমবার রামপুরহাটের (Rampurhat) বগটুই গ্রামে বোমা হামলায় মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের। তাঁর মৃত্যু ঘিরেই বর্তমানে ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তেজনা গোট রাজ্যজুড়ে। ভাদু রামপুরহাটের এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন ভাদু। ঘটনার সময় একটি চায়ের দোকান বসে আড্ডা মারছিলেন। এমতাবস্থায়, তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে পালায় এক দল দুষ্কৃতি। স্থানীয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে(Rampurhat Medical College) ভাদুকে নিয়ে যাওয়া হলেও হয়নি শেষ রক্ষা। দুষ্কৃতিদের বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ওই গ্রাম জুড়ে। গ্রামেরই কয়েকটি বাড়িতে পর পর আগুন লেগে যায়।
খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। প্রথমদিকে, খবর আসে আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। কিন্তু ঘড়ির কাঁটার হাত ধরে বাড়তে শুরু করে মৃতের পরিমান। দমকলের হিসাব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। উল্লেখ্য, এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য জানিয়েছেন, ‘গোটা ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে এলাকায়। একটি বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। দমকলের রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট মৃত্যু হয়েছে দশজনের। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত কোনও রাজনৈতিক যোগসূত্র এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে দু’টি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ এদিকে, গোটা ঘটনায় কোনওরকম রাজনৈতিক গন্ধ পাচ্ছেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর ব্যাখ্যা, শট সার্কিট থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন- ‘গ্রেফতার করলে দোষী হয় না, আদালতে প্রমান করতে হয়’, অভিষেক ইস্যুতে ফের সরব কুণাল
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই পানিহাটি তৃণমূল নেতার হত্যা। তারপর আবার এদিন রামপুরহাটেও আরেক তৃণমূল নেতার হত্যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। গোটা ঘটনায় সাধারণ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসাবে তৃণমূলকেই কাঠগোড়ায় দাঁড় করাতে ব্যস্ত রাজ্যের বিরোধী শিবির। বঙ্গ বিজেপির প্রধান দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মতে, দলের অন্তঃদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর আরও দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বিপদে পড়তে পড়ছে সাধারণ মানুষকে।
ইতিমধ্যে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিগত কয়েকদিনে বোমা-গুলিতে মৃত্যু হয়েছে দুই তৃণমূল নেতার। যার জেরে রাজনৈতিক মহলেও বাড়ছে জল্পনা। এই ঘটনার পরিরপ্রেক্ষিতে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রথমদিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নেই বলে দাবি করলেও, পরে সেই দাবিকে টপকে গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।