সংক্ষিপ্ত
- পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বাসিন্দা দেব বাগদি
- আট বছরের শিশু ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত
- দেবকে সুস্থ করতে এগিয়ে এসেছে এলাকার অন্যান্য স্কুলও
পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা ব্লকের রঘুনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র দেব বাগদি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। দুরারোগ্য এই রোগের চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন পেশায় দিনমজুর বাবা নারায়ণ বাগদি। ছোট্ট দেবকে সুস্থ করে তুলতে তাই তার নিজের স্কুল তো বটেই, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এলাকার অন্যান্য স্কুলও। পাশাপাশি, এই কাজে সহোযোগিতার হাত বাড়িয়েছে সহপাঠী এবং এলাকার অন্যান্য স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষক শিক্ষিকারা। ছেলের জীবন বাঁচাতে সবাই মিলে উদ্যোগী হওয়াদেবের স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্যানসার রোগে আক্রান্ত শিশু দেব বাগদি রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নারায়ণ বাগদি পেশায় দিনমজুর এবং মা দীপা বাগদি গৃহবধূ। য় খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে দুঃস্থ ছাত্রের পরিবার।
প্রায় ৪ মাস আগে বছর আটের দেব হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করানো হয় তার। এরপর বীরভূমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে তার পরিবারের লোকজন জানতে পারে শিশুটি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই অবস্থায় শিশুটিকে মুম্বইয়ে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন- লোকাল ট্রেনেই পড়াশোনা,সেনাবাহিনীতে যেতে চায় নিরাশ্রয় অর্জুন
পুত্রসন্তানের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসার খরচ জোগাতে দিনমজুর বাবা স্থানীয় বাসিন্দা-সহ প্রশাসনের কাছে সাহায্যের জন্য যান। এইভাবে কিছু সাহায্য পেয়ে মুম্বইয়ে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় দেবের। এ দিকে রঘুনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রের পাশে দাঁড়াতে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলে। শিক্ষক শিক্ষিকারাও আর্থিক সাহায্যের জন্য হাত বাড়ান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাঁকসা ব্লকের বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার আরও ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে দেবের চিকিৎসায় সাহায্যের জন্য লিখিত ভাবে আবেদন করেন। কাঁকসা রঘুনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার চৌধুরী বলেন, 'আমাদের স্কুলের ছাত্র দেব বাগদি শারীরিক ভাবে একটু অসুস্থ ছিল। এর পর জানতে পারি ছাত্রটি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। এই দুঃসংবাদ পেয়ে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকা সহ সহপাঠীদের মধ্যে ওই ছাত্রের চিকিৎসার খরচ জোগাতে চাঁদা তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সকলেই সাধ্যমতো আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। স্কুলের দুই শিক্ষিকা পিয়ালি সাহা ও তন্দ্রিমা ঘোষ এই চাঁদা তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন।'
দেবের বাবা নারায়ণ বাগদি জানিয়েছেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে পথচলতি মানুষের কাছ থেকে চিকিৎসার খরচ সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। এ ছাড়াও এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে অর্থ সাহায্য করেছেন। সরকারি সাহায্যের জন্যেও আবেদন জানানো হয়েছে স্থানীয় বিডিও-কে। কিন্তু মুম্বই গিয়ে দেবের চিকিৎসা সঙ্গে যাওয়া আসা, থাকাখাওয়ার খরচের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে কিছুটা আশ্বস্ত দেবের পরিবার।