সংক্ষিপ্ত
আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের বাকি চার পুরনিগমে ভোট হলেও হাওড়া পুরনিগমে কবে ভোট হবে তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। হাওড়া নিয়ে রাজ্য সরকার অবস্থান স্পষ্ট করেনি বলেই হাওড়া পুরনিগম নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস।
আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের বকেয়া চার পুরনিগমে নির্বাচন (WB Municipal Election)। ওই দিন চন্দননগর (Chandannagar), বিধাননগর (Bidhannagar), শিলিগুড়ি (Siliguri) এবং আসানসোল (Asansol) পুরনিগমে ভোট হবে। ওই চার কেন্দ্রের ভোটগণনা ২৫ জানুয়ারি (Vote Counting)। তবে হাওড়া (Howrah) নিয়ে এখনও পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান ঘোষণা করেনি রাজ্য সরকার। সেই কারণে হাওড়া পুরসভার ভোট নিয়ে এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। সোমবার চার পুরনিগমের ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) তরফে একথা জানানো হয়েছে। আর হাওড়া নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty )।
হাওড়া পুরনিগমের ভোট প্রসঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস বলেন, "হাওড়া নিয়ে রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কোনও অবস্থান স্পষ্ট করেনি। সেই কারণে হাওড়া পুরনিগমের ভোট নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।"
উল্লেখ্য, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালে বালি পুরসভাকে হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩৫ ওয়ার্ড বিশিষ্ট বালি পুরসভাকে ১৬টি ওয়ার্ডে পরিণত করে হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম দিকেই ফের বালিকে হাওড়া থেকে ভাগ করা হবে এমন একটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। অবশেষে বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে হাওড়া পুরনিগম (সংশোধনী) বিল ২০২১ পাশ করানো হয়। কিন্তু, সেই বিলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যপাল সই না করায় হাওড়া পুরনিগমের নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
আরও পড়ুন- চার পুরসভার ভোট ২২ জানুয়ারি, গণনা ২৫ জানুয়ারি
এদিকে বালিকে হাওড়া পুরনিগম থেকে আলাদা করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। আর সেই কারণে বিধানসভায় পাশ করা বিল সইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে। তাতে রাজ্যপাল সম্মতি জানিয়েছেন বলে সম্প্রতি জানানো হয় নবান্নর তরফে। যদিও রাজ্যপালের দাবি, তিনি কোনও বিলে স্বাক্ষর করেননি। আর তা নিয়েই দু'তরফের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। তার জেরেই এবারও ঝুলে রইল হাওড়া পুরনিগমের ভোট। আর এই পরিস্থিতিতে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, হাওড়া নিয়ে এখনও অবস্থান স্পষ্ট করেনি রাজ্য সরকার। তাই হাওড়া পুরভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি আপাতত। পরে যথাসময়ে ঘোষণা হবে।
নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করার জন্য এনিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন সুজন। তিনি বলেন, "এটা সব মিলিয়ে একটা ছেলেমানুষি চলছে। হাওড়া পুরভোট কলকাতার সঙ্গে হল না আজও হল না। সরকারের এত অপর্যাপ্ত পরিকল্পনা ও বন্দোবস্ত, যে কোনও কিছুই তারা ঠিক করতে পারছে না। কেন একসঙ্গে মেলাল, কী করবে, না করবে কিছুই ঠিক নেই। আর নির্বাচনটাকে নিয়ে কি ছেলেমানুষি করা হচ্ছে? সাত-আট বছর পর ভোট হচ্ছে। আমরা বলেছিলাম যেন তাড়াতাড়ি ভোট হয় আর সেটা যেন গণতন্ত্র সম্মতভাবে হয়। কারণ কলকাতা পুরনির্বাচনে তো আমরা দেখেছি। কেন ওই সময় ভোটের একদিন পরই কাউন্টিং হল? আসলে সরকার আগে থেকেই ঠিক করে নিয়েছে যে পুনর্নির্বাচন দেবে না।"
আরও পড়ুন- 'রাজ্য সরকার কিছু জানায়নি', হাওড়ার পুরভোট এখনও অনিশ্চিত বলল কমিশন
তিনি আরও বলেন, "গৌতম দেব কে? তিনি হেরে গিয়েছেন। মেয়র বা ডেপুটি মেয়র ছিলেন না। মন্ত্রী ছিলেন তিনি হেরে গিয়েছেন। তারপর তাঁকে রিহ্যাবিলিটেশন দেওয়ার জন্য ওখানে দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি প্রশাসক থেকে সেখানে নির্বাচন করা মানে সেটাকে কলুষিত করা। তাই নির্বাচন ঘোষণার আগে প্রশাসক যাঁরা রয়েছেন তাঁদের বাতিল করার সিদ্ধান্ত কি রাজ্য সরকার বা নির্বাচন কমিশন নিয়েছে? প্রশাসক মণ্ডলী হিসেবে বেআইনি বাহিনীকে রেখে লুঠের ব্যবস্থা করা যায়। কিন্তু, তাঁদের রেখে নির্বাচন করা কলুষিত ছাড়া আর কিছুই নয়।"