সংক্ষিপ্ত
- লকডাউনের বাজারে চলছে অনলাইন ক্লাস
- গ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই
- গাছে চড়ে বসেছেন বাঁকুড়ার যুবক
- বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ান তিনি
লকডাউনের জেরে হঠাৎ করে যেন বদলে গিয়েছে দৈনন্দিন জীবন! অফিস, স্কুল, কলেজ বন্ধ, এমনকী বাস-ট্রেনও চলছে না। বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করছেন অনেকেই। 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' শব্দটির সঙ্গে এখন কম-বেশি সকলেই পরিচিত। কিন্তু তা বলে 'ওয়ার্ক ফ্রেম ট্রি'! শুনতে অবাক লাগলেও, এভাবেই শিক্ষাদান করছেন বাঁকুড়ায় এক যুবক।
আরও পড়ুন: ঝড়-জলের রাতে প্রসব শুরু, পুলিশের বদন্যতায় প্রাণ বাঁচল পোষ্যের
বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের আহন্দা গ্রামে থাকেন সুব্রত পতি। পেশায় তিনি শিক্ষক। কলকাতার একটি বেসরকারি চাকরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়ান তিনি। এ রাজ্য তো বটেই, লকডাউনের কারণে এখন দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলছে। শিক্ষকরাও যে যাঁর বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। ব্যতিক্রম নন সুব্রতও। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে! পড়ুয়াদের কথা ভেবে লকডাউনের বাজারে কোনও কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ক্লাস চালু হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সুব্রত যে চাকরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে পড়ান, অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে সেখানেও। আর তাতেই বেজায় বিপাকে পড়েছেন ওই তরুণ শিক্ষক।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ ট্রেন চলাচল, স্টেশনে ভবঘুরেদের খাওয়ানোর অনুমতি দিল না রেল
আরও পড়ুন: চিকিৎসক সন্তানদের নিয়ে 'গর্বিত', দুঃশ্চিন্তাও বাড়ছে রায়গঞ্জের দম্পতির
কেন? বাড়ি তো নয়ই, গ্রামের সব জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক সমানভাবে কাজ করে না। সত্যি কথা বলতে, কোনও মোবাইল সংস্থার নেটওয়ার্ক নেই বললেই চলে। তাহলে উপায়? বন্ধুদের সাহায্যে গ্রামের এক প্রান্তে নিমগাছে মাচা বেঁধেছেন সুব্রত। দিনভর সেই মাচায় বসেই চলে তাঁর 'অনলাইন ক্লাস'। উঁচু জায়গায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক পেতেও কোনও সমস্যা হয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকালে সাড়ে ন'টায় ল্যাপটপ, মোবাইল, সামান্য খাবার ও জল নিয়েও সটান গাছে উঠে পড়েন তিনি। এই ব্যবস্থায় খুশি গ্রামবাসীরা। কম-বেশি সাহায্যও করছেন সকলেই। শিক্ষক সুব্রত পতি বলেন, 'অভিনবত্বের কিছু নেই। আমাদের এলাকায় প্রায়শই হাতি ঢুকে পড়ে। গাছের উপর মাচা তৈরি করে হাতি তাড়ানো পদ্ধতি বেশ পুরানো। সেই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়েই ছাত্রছাত্রীদের পড়াচ্ছি।'