সংক্ষিপ্ত
মুর্শিদাবাদের লালগোলা বিধানসভার অন্তর্গত বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিতেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে।
শীতের মরশুম (Winter) শুরু হতেই আচমকা মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) লালগোলা (Lalgola) বিধানসভার অন্তর্গত বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে পদ্মা নদীতে (Padma River) ভাঙ্গন দেখা দিতেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে। স্থানীয় মানুষেরা বলেন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এখনই ভাঙন রোধে পদক্ষেপ না করলে ফের ভাঙনের কবলে পড়ে তলিয়ে যাবে জনপদ মুহূর্তের মধ্যে।
এই ব্যপারে রাজ্যের সেচ দপ্তরের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি। রাজ্য সরকার ক্ষমতা অনুযায়ী ভাঙন থেকে মানুষ রক্ষা করতে সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহন করবে"। পদ্মা ঘেঁষা লালগোলা বিধানসভার শেখালিপুর, রাধাকৃষ্ণপুর, বিলবোরাকোপরা এলাকার পদ্মা নদীতে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। প্রতিবছর বর্ষাকালে পদ্মা নদীতে জল বাড়লে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিলেও এবার নদীর জল কমতে থাকলে আরেক দফা ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙনের ফলে এলাকার আর্থিক এবং সামাজিক জীবন জর্জরিত। পদ্মা নদীর ভাঙনে এলাকার মানচিত্রে কয়েক দফা পরিবর্তন হয়েছে।
ভিটে মাটি হারিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকে পরিণত হয়েছে কয়েকশ পরিবার। এই বিষয়ে এলাকার প্রবীন নাগরিক নিয়াজুদ্দিন শেখ, জারজিস হোসেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“এক সময় নিজের জমিতে ধান পাট ফলিয়ে সংসার চালিয়েছি। ওই জমি এখন নদীগর্ভে। আর এখন সংসার চালাতে নিজেরা অন্যের দুয়ারে ঘুরি।” বর্তমানে নগর থেকে বক চর প্রায় তিন কিমি জুড়ে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ফের এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। নদী পাড় থেকে জল স্তর প্রায় কুড়ি ফিট খাদ করে প্রবাহিত হচ্ছে ,জলের গভীরতাও প্রায় ৪০ ফিট নিচে।
এর মধ্যে বিশাল এলাকা জুড়ে যে ভাবে নদী পাড় বসে যাচ্ছে তাতে ৩০ মিটার দূরে থাকা জনবসতি যে কোনও সময় তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছে বলে দাবি করেছেন লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন রিপন। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। আশা করছি দ্রুত ভাঙন রোধে পদক্ষেপ করা হবে।” কিন্তু যৌবন থেকে বার্ধক্যে পৌছালেও এলাকার নদী ভাঙন রোধে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নদী পাড়ের প্রবীণ বাসিন্দারা।
হা হুতাশ করে তাঁরা বলছেন, নেতা মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বন্যা জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বার বার আর এলাকার মানুষ বছর বছর হারিয়েছে ভিটেমাটি, কাজের কাজ কিছু হয় নি। এইভাবে ক্রমশ শীত বাড়বে আর তার মধ্যে পদ্মা এসে দরজার গোড়ায় ধাক্কা দেবে। এই ভাবেই আমাদের জীবন কেটে যাবে বছরের পর বছর"।