সংক্ষিপ্ত

' কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতায় বেহাল জাতীয় সড়কের জন্যই এতবড় দুর্ঘটনা'। ' আমি নিজে ওই এলাকা ২ দিন আগেই পরিদর্শন করে এসেছি',তৃণমূলের অভিযোগ ওড়াল হাইওয়ে অথরিটি।


রায়গঞ্জের ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় বেহাল রাস্তা দায়ী নয় বলে রাজ্যের অভিযোগ  অস্বীকার করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের  জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষ। উল্লেখ্য,  রায়গঞ্জ থানার রুপাহার এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক ভর্তি একটি বাস পাশের নয়নজুলিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় ৬ জন যাত্রীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পরেই কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দাগে তৃণমূল। 'প্রশাসনের নির্দেশের জন্য নয়, আমরা আজ অন্যান্য দিনের মতোই রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করেছি', জেলাশাসকের দাবি উড়িয়ে জানালেন বার্তা ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির মালদহ ডিভিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর।

আরও পড়ুন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতায় এতবড় দুর্ঘটনা', বিস্ফোরক রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান

অভিযোগ অস্বীকার করেছে জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষ  

বুধবার গভীর রাতে রায়গঞ্জ থানার রুপাহার এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক ভর্তি একটি বাস পাশের নয়নজুলিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় ৬ জন যাত্রীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। মৃতেরা প্রত্যেকেই ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ওই রাতেই উদ্ধারকাজ শুরু করে।বাসের বাকি যাত্রীদের উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। যাত্রীদের মধ্যে দুইজনের আঘাত গুরুতর থাকায় তাদের ভর্তি করার পাশাপাশি বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের সাহায্যে যাত্রীদের ঝাড়খন্ডে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা হয়।তবে দূর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে জাতীয় সড়কের বেহাল দশাকেই দায়ী করেছে স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।তবে জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আরও পড়ুন, WB Assembly Election: মুর্শিদাবাদে সরাসরি 'খেলা হবে'-র ডাক, মোদীকে চ্যালেঞ্জ সায়নীর
রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে বেহাল অবস্থা

ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির পক্ষ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে বারাসাত থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারনের কাজ শুরু হয়।উত্তর দিনাজপুর জেলায় রুপাহার, পানিশালা, করনদিঘি এলাকার কয়েকটি স্পটে জমিজটের কারনে এই জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ ব্যহত হয়।ওই অংশগুলি বাদ রেখেই জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলতে থাকে।ওই অংশগুলিতে ফোর লেন থেকে রাস্তা ডাইভারশন করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি রুপাহার এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ফ্লাই ওভারের কাজ শুরু করা হয়। ফলে ডাইভারশন করে দেওয়া রাস্তার অংশ রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে দিনকে দিন বেহাল হয়ে পড়ে।

রাস্তা অবরোধ করেও হাল ফেরেনি 

রাস্তার ওই অংশের বিটুমিন উঠে গিয়ে,  বড়ো বড়ো গর্ত তৈরি হয়ে তা কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে। ওই অংশটুকু পার হতে পথচলতি গাড়িগুলি মাঝেমধ্যেই দূর্ঘটনার শিকার হয়।ওই রাস্তার মেরামতের দাবিতে এলাকার বাসিন্দারা বিগতদিনে কয়েক দফায় রাস্তা অবরোধ করে। কিন্তু তাতেও হাল ফেরেনি।সম্প্রতি রুপাহার এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ডাইভারশন করা রাস্তার পাশ থেকে বিপুল পরিমাণে মাটি কেটে তা রাস্তার কাজেই লাগানো হয়।ফলে রাস্তার পাশে বিশাল আয়তনের গর্ত ( নয়নজুলি)  তৈরী হয়। রাস্তার পাশে কোনও গার্ডওয়াল না দিয়ে ওই পরিমান মাটি কেটে নেওয়ার ফলে রাস্তার ওই অংশ আরও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে।বুধবার রাতে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পরিযায়ী শ্রমিকভর্তি বাসটি হাইওয়ে অথরিটির সৃষ্টি করা ওই নয়নজুলিতে গিয়ে পড়ে। 

আরও পড়ুন, Karaya Explosion: কড়েয়া বিস্ফোরণ কাণ্ডে NIA তদন্তের দাবি জানালেন তথাগত

'হাইওয়ে অথরিটি এই ব্যাপারে একটু সজাগ থাকলে বাস দূর্ঘটনায় এতো যাত্রীর মৃত্যু হতো না'-প্রত্যক্ষদর্শী 

এলাকার বাসিন্দা তথা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জগৎ শর্মা জানিয়েছেন, ' এই ডাইভারশন রাস্তার কারণে প্রায় প্রতিদিন এখানে দূর্ঘটনা ঘটে। প্রথমত,  ফোরলেনের শেষে ডাইভারদের সতর্ক করার জন্য ছোট্ট একটা বোর্ড লাগানো হয়েছে। রাতে প্রায়শই সেটা পথচলতি গাড়ির চালকদের চোখেই পড়ে না।দ্বিতীয়ত, ফোর লেন থেকে টু- লেনে যাওয়ার সময় এত অল্প জায়গা রাখা হয়েছে,  যে গাড়িগুলোকে শার্পটার্ন নিতে হয়। এর ফলেই দূর্ঘটনা ঘটে।এই বাস দূর্ঘটনা এই কারনেই ঘটেছে। কয়েকমাস আগেও সেখানে মাঠ ছিল।ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির পক্ষ থেকে ওই জমির মাটি কেটে নেওয়ার  ফলে বিরাট আকারের নয়নজুলি তৈরী হয়েছে। হাইওয়ে অথরিটি এই ব্যাপারে একটু সজাগ থাকলে বাস দূর্ঘটনায় এতো যাত্রীর মৃত্যু হতো না।'

আরও পড়ুন, Post poll violence: মগরাহাট BJP প্রার্থীর মৃত্যুতে তদন্তে নামল CBI

' আমি নিজে ওই এলাকা ২ দিন আগেই পরিদর্শন করে এসেছি',ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ৬ মৃত্যুর পর বলল হাইওয়ে অথরিটি 

জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা জানিয়েছেন, 'এই ঘটনার পর জাতীয় সড়কের ওই অংশ দ্রুত মেরামতের জন্য ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান  তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃনমূল নেতা অরিন্দম সরকার অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, ' কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতায় বেহাল জাতীয় সড়কের জন্যই এতবড় দুর্ঘটনা ঘটল। এর দায়ভার কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রককেই নিতে হবে।'ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির মালদহ ডিভিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর দীনেশ কুমার হানসারি জানিয়েছেন,'জাতীয় সড়কের রক্ষনাবেক্ষন নিয়মিত করা হয়। আমি নিজে ওই এলাকা ২ দিন আগেই পরিদর্শন করে এসেছি। তবে এপ্রিল মাস থেকে টানা বৃষ্টির জন্য রাস্তার উপরি অংশের বিটুমিন টপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশের জন্য নয়, আমরা এদিন অন্যান্য দিনের মতোই রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করেছি।'

   আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে  

আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়  

আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ  

আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা  

 

YouTube video player