সংক্ষিপ্ত

পৌরসভা নির্বাচনে এবার ঝালদা পৌরসভার ১২ টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৫টি আসন দখল করে। কিন্তু বোর্ড গঠন সম্ভব হয়নি একাধিক জটিলতায়

পানিহাটিতে কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা(Barrackpore Police Commissioner Manoj Verma)। তদন্ত প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রতিক্রিয়াও দেন তিনি। এদিনই পানিহাটিতে শুট-আউটের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা রাজ্য জুড়ে। গুলিতে নিহত হন তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত(Trinamool councilor Anupam Dutta)। তাঁর ঘাড়ে এবং মাথায় গুলি লাগে বলে অভিযোগ। আট নম্বর ওয়ার্ডের পার্কের কাজ দেখভাল করতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে জানা যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে তাকে ভর্তি করা হয়। এদিকে খবর পাওয়া মাত্রই তখনই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় খড়দা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। অনুপম দত্ত কে লক্ষ্য করে পরপর চারটি গুলি চলে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একজন দুস্কৃতীদের ধাওয়াও করেন। কিন্তু পাড়ার গলির মধ্যেই গা ঢাকা দেয় দুষ্কৃতিরা। দলের অন্দরে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরেই এই কাণ্ড বলে অনুমান স্থানীয়দের একটা বড় অংশের। সদ্য নির্বাচনে অনুপম দত্ত জয়ী হন তৃণমূলের পক্ষ থেকে।

এদিকে এই তৃণমূল নেতার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারের অন্দরে। ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিহত তৃণমূল নেতার শ্যালিকা প্রিয়াঙ্কা দাস বলেন, “বাবার কাছে ফোন জানতে পেরেছি যে গুলি লেগেছে। কিন্তু আবার বাবা কিচ্ছু বলেনি যে কার লেগেছে কি বৃত্তান্ত। আমরা বুঝতে পারছি না কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।” অন্যদিকে এদিনই আবার কার্যত একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায় পুরুলিয়ায়। সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনে গোটা রাজ্যেই বড় জয় পেয়ছে শাসক তৃণমূল। কিন্তু তারপরেও রাজ্যের একাধিক পৌরসভায় নিজেদের মাটি ধরে রেখেছিল বিরোধীরা। এদিকে পৌরসভা নির্বাচনের সময় গোটা রাজ্যজুড়েই ব্যাপক অশান্তির খবর পাওয়া যায়। কিন্তু ভোট পর্ব মেটার পরেও যে তা থামার কোনও লক্ষণ যে নেই তা সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনা থেকেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। তপন কান্দু ঝালদা পুরসভার দু’‌ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। রবিবার সন্ধেবেলা বাঘমুণ্ডির পথে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানেই যে তার প্রাণ সংশয় হতে পারে এ কথা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। সন্ধেবেলা হাঁটতে বেরিয়েই গুলিবিদ্ধ হলেন তপন কান্দু। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। এদিকে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে এবার ঝালদা পৌরসভার ১২ টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৫টি আসন দখল করে।

আরও পড়ুন- যোগী ঝড়ে ধরাশায়ী অখিলেশ-মায়াবতী, উত্তরপ্রদেশে সর্ব বৃহৎ দল হিসাবে ফের আত্মপ্রকাশ বিজেপির

এর মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন কংগ্রেস প্রার্থী তপন কান্দু। ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। ঝালদা পৌরসভার স্বামী-স্ত্রীর জয়ে ঝালদায় অনেকটায় অক্সিজেন পেয়েছে কংগ্রেস। অন্যদিকে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে ৫টি আসন দখল করে। এক জন নির্দল প্রার্থী   জয়লাভ করার পর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার পর শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বেড়ে দাঁড়ায় ৬টিতে। অন্যদিকে তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে ঝালদও পৌরসভার ৮ নাম্বার ওয়ার্ড থেকে নির্দল থেকে জয়ী হন সোমনাথ কর্মকার। তিনি এখনও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বা কংগ্রেস কোথায় যোগদান করেননি। স্বাভাবিকভাবে ঝালদা পৌরসভার একক ভাবে কোনও দলের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে কংগ্রেস কাউন্সিলারকে গুলি কাণ্ডে বোর্ড গঠনের যোগ থাকতে পারে। যদিও এই গুলি কাণ্ড নিয়ে জেলার কোন কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এখনো কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিকেলে ঝালদা শহরের অদূরে ফাঁকা রাস্তায় একদল দুষ্কৃতী বাইকে এসে তপনবাবুকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। মাথায় গুলি লাগতেই তখনই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কংগ্রেস কাউন্সিলর৷ এরপর দ্রুত তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তারপরই তাঁকে দ্রুত ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এই ঘটনায় মঙ্গলবার জেলা জুড়ে বনধ ডাকা হয়েছে। চাপা উত্তেজনা রয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। অন্যদিকে এদিন একই ধরণের একটি ঘটনা ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে। সেখানেও দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়। 

আরও পড়ুন- কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েও উত্তরপ্রদেশে এত বড় জয় কী করে পেল বিজেপি, এক্স ফ্যাক্টর কী যোগী