সংক্ষিপ্ত
এত দিন অনুব্রতের সম্পূর্ণ দেখভাল করত সায়গল হোসেন। প্রত্যেকদিন নিয়ম মতো ঘড়ির কাঁটা মেপে নেতাকে ওষুধ খাওয়ানো, নেবুলাইজ়ার দেওয়া, সব কিছুতে কড়া নজর থাকত সায়গলের।
গরু পাচার মামলায় ইডি হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করা হবে, এই জেরাপর্বের চেয়েও বর্তমানে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যার মুখোমুখি কেষ্ট মণ্ডল। কারণ, সর্বক্ষণের ছায়াসঙ্গী সায়গল এখন আর তাঁর সাথে নেই, এবার তাঁর দেখাশোনা করবে কে? আসানসোল সংশোধনাগার সূত্রে জানা গেছে, এত দিন ধরে অনুব্রতের সম্পূর্ণ দেখভাল করছিল সাগরেদ সায়গল হোসেন। প্রত্যেকদিন নিয়ম মতো ঘড়ির কাঁটা মেপে নেতাকে ওষুধ খাওয়ানো, নেবুলাইজ়ার দেওয়া, সব কিছুতে কড়া নজর থাকত সায়গলের। তার অনুপস্থিতিতে নিজের খেয়াল রাখার সমস্ত দায়িত্বভার গিয়ে পড়ল অনুব্রতর কাঁধেই।
সূত্র মারফৎ জানা গেছে যে, আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হলে অনুব্রত বেশ নিশ্চিন্ত হয়ে নিজের পক্ষের আইনজীবীদের বলেছিলেন, ‘জেলে সায়গল আছে। চিন্তা নেই।’ আসানসোলের জেলে অনুব্রত মণ্ডলের পাশের সেলেই স্থান দেওয়া হয়েছিল তাঁর দেহরক্ষী তথা সর্বক্ষণের সঙ্গী, সায়গল হোসেনকে। তাকেও তৃণমূলের নেতার সঙ্গে একসাথেই গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। সংশোধনাগারের ভেতর থাকাকালীন এত দিন ধরে কেষ্ট মণ্ডলের অধিকাংশ কাজেরই ভার নিয়েছিল সায়গল। প্রত্যেক দিন দুপুরে অনুব্রতর স্নানের ব্যবস্থা, খাবার নিয়ে আসায় সহযোগিতা, শরীর স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা, সবকিছুই নিষ্ঠা ভরে সামলাত এই সহযোগী। সারা দিনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর প্রায় ৩৪টি ওষুধ খেতে হয় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে নিতে হয় নেবুলাইজ়ারও। এই সমস্ত বন্দোবস্ত সায়গলের দ্বারাই সম্ভব হত বলে জানা গেছে।
এই সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সম্প্রতি দিল্লি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। খবরটি কানে যেতেই বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন জেলবন্দি হেভিওয়েট। তাঁকে নজরে রাখা কারারক্ষীদের বক্তব্য, সায়গল তাঁর এতটাই খেয়াল রাখত এবং অনুব্রত নিজের ব্যক্তিগত কাজের বিষয়ে এতদিন এতটাই উদাসীন ছিলেন যে, সে দিল্লি চলে যাওয়ায় তিনি এবার জেলের অভ্যন্তরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। অনুব্রতকে তাঁর শরীরের খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে শুক্রবার দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয় সায়গল। সেদিন রাতে জেলের হাসপাতাল সেলে স্বাভাবিকই ছিলেন অনুব্রত। নিজে নেবুলাইজ়ারও নিয়েছেন বলে খবর। শনিবার সকালে প্রাতরাশের সময়ে তাঁর শরীরের অবস্থা, নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন কি না, খোঁজ নিয়েছেন জেলের কর্মীরা। সব নিয়ম মেনেই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনুব্রত। কোনও সমস্যা হলে জেল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
জেল সূত্রে খবর, অনুব্রতের যা ওষুধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, তা জেলে নিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছিল কোর্ট। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষকে তাঁর দেখভালে কর্মী নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। যদি অনুব্রত অসুস্থ হয়ে পড়েন, চিকিৎসক ডাকা হবে বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ।
জেল কর্মীরা জানিয়েছেন, অন্য বন্দিদের সঙ্গে খুব একটা কথা বলেন না কেষ্ট মণ্ডল। সায়গল চলে যাওয়ার পরেও কারুর সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলেননি তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুন-
বাংলাকে সহজে দখল করা যাচ্ছে না বলেই ভাগ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছে বিজেপি, মত তৃণমূল নেতা সুখেন্দুশেখর রায়ের
ছুটির দিনে খোশ মেজাজে অভিষেকের গড়ে শুভেন্দু অধিকারী, সূচনা করবেন কালীপুজোর উৎসব
বীরভূমে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেবেন সিউড়ির দুই নেতা? শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই মন্দিরে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’