সংক্ষিপ্ত
শান্তিনিকেতন গড়ার ক্ষেত্রে লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্র নারায়ণ রায়ের অবদানের কথা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেছেন। মালভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য লালগোলার মহারাজাকে ওই সব এলাকার বাসিন্দারা নাম দিয়েছিলেন 'পানিপাড়ে'।
অনেক দিনের দাবি ছিল। আর এবার তা মেনেই মুর্শিদাবাদের লালগোলায় অবস্থিত ব্রিটিশ আমলের শতাব্দী প্রাচীন এম এন অ্যাকাডেমি হাই স্কুলে আন্তর্জাতিক মানের অডিটোরিয়াম ও দুই বাংলার স্মৃতি মিশ্রিত সংগ্রহশালা তৈরি করা হল। বৃহস্পতিবার এর উদ্বোধন করা হয়। এই উদ্যোগে বেজায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই অনুষ্ঠানে স্কুলের প্রাক্তনীদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মহম্মদ আলি, বিডিও সুব্রত ঘোষ। মহম্মদ আলি বলেন, "এই স্কুলের ঐতিহ্য দুই বাংলার মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। আর বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং নাগরিক পরিষেবা দিয়েছিলেন। সেই মাটির মানুষ আমরা, এটাই আমাদের গর্ব।"
আরও পড়ুন- পুলিশের জালে এবার ভুয়ো 'নাসা'-র এজেন্ট, গ্রেফতার এয়ারপোর্টের বাসিন্দা মধুমিতা সাহা
শান্তিনিকেতন গড়ার ক্ষেত্রে লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্র নারায়ণ রায়ের অবদানের কথা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেছেন। মালভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য লালগোলার মহারাজাকে ওই সব এলাকার বাসিন্দারা নাম দিয়েছিলেন 'পানিপাড়ে'। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যোগীন্দ্র নারায়ণ রায়ের আর্থিক সাহায্যের কথা অনস্বীকার্য। স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে বহরমপুর সদর হাসপাতাল গড়ে উঠেছিল তাঁর দানে। শতবর্ষ পার করে দেওয়া লালগোলা এম এন অ্যাকাডেমিও গড়ে তুলেছিলেন তিনি। আর দুই বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুগঠিত করেছিলেন এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বর্গীয় যোগীবর বরদাচরণ মজুমদার।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের হুইপে মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক মন্ডলীতে আচমকা রদবদল, বিস্ফোরক অধীর সচিব
যোগীবর বরদাচরণ মজুমদারের মূর্তি উন্মোচন থেকে শুরু করে তাঁর ব্যবহৃত কক্ষ, সরঞ্জাম সংরক্ষণ সহ একটি উন্নত মানের আর্ট গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে মূলত বিভিন্ন শিল্পীদের শিল্পকলা স্থান পাবে আগামী দিনে। প্রসঙ্গত, যোগীবর বরদাচরণের হাত ধরেই অতীতে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম লালগোলায় নিয়মিত যেতেন। জানা যায় বরদাচরণের সময়তেই স্কুলের গৌরব শীর্ষ স্থানে পৌঁছে গিয়েছিল। এমনকী, সেই সময় ওপার বাংলা অর্থাৎ পূর্ববঙ্গ থেকে বহু পড়ুয়া বরদাচরণের প্রচেষ্টায় এই স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- শিল্পের হাল ফেরাতে নির্দেশ নবান্নের, উচ্চ পর্যায়ের 'কমিটি' গঠন মুর্শিদাবাদে
এই স্কুলে যে আর্ট গ্যালারি তৈরি করা হয়েছে তা প্রায় ২০০০ স্কোয়ার ফুট বিস্তৃত। ওই গ্যালারিতে জেলা ও রাজ্যের ১৫০ টি বিভিন্ন প্রান্তের লোক চিত্র এবং ভাস্কর্য স্থান পাবে বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রাক্তনী এবং চিত্রশিল্পী মিজানুর খান। বিদ্যালয়ের আরও এক প্রাক্তনী তথা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার দাস বলেন, "শুধু বিদ্যালয় সংস্কার নয় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটিও নতুনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এসব সম্ভব হয়েছে প্রাক্তনীদের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে।"