সংক্ষিপ্ত

পছন্দের লোককে সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দিতে নিজের অফিসে ডেকে ডব্লুবিএসআরডিএসএ-এর ঐ এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল রাজীব হোসেন নামে ওই নেতার বিরুদ্ধে। ওই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিজে ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিরাপত্তার দাবিতে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই কড়া নির্দেশ দিয়ে গেছিলেন। সরকারি কাজ দুর্নীতিমুক্ত করতে 'ই-টেন্ডারের উপর বিশেষ জোর দেওয়ার কথা মুর্শিদাবাদে এসে প্রশাসনিক বৈঠকের নির্দেশ দিয়ে যান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার তার সেই নির্দেশকে উপেক্ষা করেই রীতিমতো শাসক দল তৃণমূলের (TMC) প্রভাবশালী নেতা তথা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের (Murshidabad Zilla Parishad) পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনে জেলাশাসকের(District Magistrate) দ্বারস্থ হলেন ডব্লুবিএসআরডিএসএ-এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র (Exicutive engineer) গৌতম সান্যাল।

ঘটনায় বুধবার ব্যাপক শোরগোল পড়েছে জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণে সব মহলে। সূত্র মারফত জানা যায়, পছন্দের লোককে সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দিতে নিজের অফিসে ডেকে ডব্লুবিএসআরডিএসএ- এর ঐ এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল রাজীব হোসেন নামে ওই নেতার বিরুদ্ধে। ওই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিজে ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিরাপত্তার দাবিতে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন। এমনকি রাজ্য পঞ্চায়েত উন্নয়ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ইঞ্জিনিয়র বলেই এদিন শেষ পাওয়া খবরে জানা যায়। 

আরও পড়ুন-জীবিত অবস্থাতেই তসলিমাকে ‘মৃত ঘোষণা’ Facebook-র, তীব্র ভাষায় ক্ষোভ উগড়ে দিলেন লেখিকা

আরও পড়ুন- বিধায়ক পদ কী থাকবে মুকুল রায়ের, সুপ্রিম নির্দেশে দুপ্তাহেই সিদ্ধান্ত নেবেন বিমান

যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি অভিযুক্ত জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেনের।তবে জেলা শাসককে লেখা অভিযোগপত্রে ওই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র লিখেছেন, তিনি এখন মারাত্মক মানসিক চাপে রয়েছেন। তাঁকে তো বটেই, তাঁর পরিবার ও অন্যান্য সরকারি আধিকারিকদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন তৃণমূল নেতা। জানা যায়,চিঠিতে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র লিখেছেন গত  জরুরি বৈঠকের জন্য মুর্শিদাবাদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন তাঁকে অফিসে ডাকেন। কথামতো সেখানে তিনি গিয়েওছিলেন। কিন্তু তিনি রাজীব হোসেনের অফিসে ঢোকামাত্রই তাঁকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয়। একটি ই-টেন্ডার প্রকাশের জন্য এই হুমকি ও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় বলে তাঁর অভিযোগ।সেক্ষেত্রে ওই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার নিজের পছন্দের মতো লোক টেন্ডার না পেলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ইঞ্জিনিয়র। 

তিনি জানান, তাঁকে ভয় দেখাতে এর পর রিভলবার ও বুলেট দেখান রাজীব হোসেন। এখানেই শেষ নয়। কর্মাধ্যক্ষের অফিস থেকে তিনি কোনওভাবে বেরিয়ে এলে তাঁর অফিসে ঢুকে পড়ে তিন দুষ্কৃতী। তাদের সবার হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। রাজীব হোসেনের মতো ওই দুষ্কৃতীরাও তাঁকে একই কথা বলে হুঁশিয়ারি দেন বলে দাবি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রের। এই অবস্থায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এদিন তিনি আজব সাফাই দিয়ে বলেন,"এই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বিরোধী ও দলের একাংশ আমার সামাজিক কাজের হিংসে করে।সেক্ষেত্রে তারা আমাকে পরিকল্পনা করে কালিমালিপ্ত করতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।পরবর্তীতে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে"। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে এইভাবে তার দলের প্রভাবশালী নেতার হাতে অমান্য হওয়ায় সকলেই হতবাক। তাই প্রত্যেকেই চেয়ে রয়েছেন এই 'ই-টেন্ডার'কাণ্ডে শেষ পর্যন্ত নবান্নের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়।

রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,আগামী দিনে পুরভোটের আগে এই ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে শাসকদল এমনকি নবান্নের অন্দরেও এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।