সংক্ষিপ্ত
- এবার পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে কাটমানি বিক্ষোভ
- কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকার দুই তৃণমূল নেতার
- প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ
- মুচলেকা দিয়ে টাকা ফেরানোর আশ্বাস
অধিকাংশ তৃণমূল নেতাই বলছেন, কাটমানি নেননি। কিন্তু চাপে পড়ে এই প্রথম কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকার করলেন দুই তৃণমূল নেতা। রীতিমতো মুচলেকা দিয়ে টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তাঁরা। দুই নেতারই অবশ্য দাবি, টাকার অধিকাংশটাই তাঁরা এলাকার অন্য নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ফলে কাটমানির জাল কীভাবে শাসক দলের সংগঠনে ছড়িয়ে পড়েছিল, তা আরও একবার সামনে চলে এল।
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের জালপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতার নাম অপূর্ব ঘোষ এবং কালীময় গঙ্গোপাধ্যায়। ওই দুই নেতার বিরুদ্ধেই দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীদের থেকে সরকারি বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পে পাওয়া টাকার একাংশ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। অভিযোগ, কারও থেকে সাত হাজার আবার কারও থেকে আট হাজার টাকা করে নিতেন ওই দুই নেতা। সুযোগ বুঝে দশ হাজার টাকাও নেওয়া হতো।
আরও পড়ুন- কীভাবে কাটমানির হিসেব রাখতেন তৃণমূল সাংসদ, শুনুন প্রমোটারের অভিযোগ, দেখুন ভিডিও
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতাদের কাটমানি ফেরানোর নির্দেশ দেওয়ার পরেই ওই নেতার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সুযোগ বুঝে আসরে নামে বিজেপি। গ্রামে ফর্ম বিলি করে তারা জানতে চায়, কার থেকে কত টাকা করে নিয়েছেন ওই দুই নেতা। প্রায় পয়তাল্লিশজন গ্রামবাসী ফর্ম ভর্তি করে বিজেপি নেতাদের কাছে জমা দেন।
এর পরে ওই দুই তৃণমূল নেতাকে নিয়ে রবিবার গ্রামের মধ্যেই সভা বসান বিজেপি নেতারা। সেখানে অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতাকে হাজির করানো হয়। দেখা যায় সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। চাপে পড়ে দু' জনেই টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে দাবি করেন, অধিকাংশ টাকাই দলের অঞ্চল এবং ব্লক সভাপতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা দলের মিছিল, মিটিং আয়োজনে খরচ হয়েছে।
এর পরে মুচলেকা দিয়ে দুই নেতা কালীময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং অপূর্ব ঘোষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেন। দলের নেতারা ভুল পথে চালিত করাতেই তাঁরা গরিব মানুষের থেকে টাকা নিয়েছেন পাল্টা দাবি করেন ওই দুই নেতাই। নিজেদের অন্যায়ও স্বীকার করে নেন তাঁরা।
প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কাটমানি ফেরোনার দাবি জোরালো হচ্ছে। সুযোগ বুঝে এবার আসরে নেমে গিয়েছে বিজেপিও। ফলে যে নেতারা এতদিন শাসক দলে থাকার সুযোগ আমজনতার থেকে টাকা তুলেছেন, তাঁরা এখন রীতিমতো চাপে।