সংক্ষিপ্ত
ন্যাক-এর করা সম্প্রতি মূল্যায়নের নিরিখে আগের থেকে একধাপ নেমে 'বি ডবল প্লাস' গ্রেড পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ‘অধঃপতন’ নিয়েই বর্তমানে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়েছে রাজ্যের শিক্ষামহলে।
করোনা ফাঁসের জেরে গত দেড়বছরের বেশি সময় ধরে গোটা দেশের পাশাপাশি ধুঁকছে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাও। বর্তমানে করোনা ফাঁস আলগা হতে পঠনপাঠন ধীরে ধীরে পুরনো ছন্দে ফিরতে শুরু করলেও অনলাইনই(Online education) পন্থায় এখনও হাঁটছে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্লাস চলছে ব্লেন্ডেড মোডে। এদিকই এরইমাঝে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মান সংক্রান্ত বিষয়ে সমীক্ষা চালায় ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কমিশন(National Assessment and Accreditation Commission) বা ন্যাক(NAAC)। আর তাতেই মাথায় হাত পড়েছে বাংলার অন্যতম নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(Vidyasagar University) কর্মকর্তাদের। ন্যাক-এর করা সম্প্রতি মূল্যায়নের নিরিখে আগের থেকে একধাপ নেমে 'বি ডবল প্লাস' গ্রেড পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের(West Midnapore) বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ‘অধঃপতন’ নিয়েই বর্তমানে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়েছে রাজ্যের শিক্ষামহলে।
এদিকে ন্যাক গ্রেডে অবনমনের কারণে বন্ধের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কোর্স। আর তাতেই উদ্বেগ বাড়ছে পড়ুয়াদের মধ্যে। ন্যাকের মূল্যায়ন অনুসারে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় 'এ' গ্রেড না পেলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে দুরশিক্ষা সহ একাধিক কোর্স চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না। কিন্তু এতদিন ন্যাকের ‘ভালো ছেলের’ তালিকায় নাম ছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেই তকমাই এবার হারাতে বসেছে। এই ক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো, রাজ্যের মধ্যে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া রবীন্দ্র ভারতী, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষার মাধ্যমে পড়ানো হয়। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মাধ্যমে বাংলা,ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সংস্কৃত, ইতিহাস, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন সহ মোট ১১টি বিষয় পড়ানো হত। তা এবার বন্ধ হতে বসেছে।
আরও পড়ুন- পুরবোর্ড গঠনের পরেই দলীয় ‘লবি’ নিয়ে কড়া বার্তা মমতার, নতুনদের দিলেন নয়া পাঠ
তবে ন্যাকের গ্রেডেশন পদ্ধতিতে বদলের জেরেই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তাদের দাবি এতদিন শুধুমাত্র রেগুলার কোর্সের উপর ভিত্তি করেই ন্যাকের মূল্যায়ন হত। দূরশিক্ষাকে এর মধ্যে ধরা হত না। কিন্তু এবছর থেকে রেগুলার এবং ডিসট্যান্স উভয় পঠনপাঠনের উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা শুরু করেছে ন্যাক। আর তাতেই অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়েছেন তারা। আর সহজ করে বললে, এতদিন ন্যাকের প্রতিনিধি দল 'অনসাইট ভিসিট' অর্থাৎ সরাসরি এসে বিশ্ববিদ্যালয় পরিকাঠামো ও পঠনপাঠনের বিষয়গুলি পরিদর্শন করত। সেই নিরিখেই মূল্যায়ন করা হত। দেওয়া হত পয়েন্ট ভিত্তিক মার্কিং। কিন্তু চলতি বছর থেকে তার সঙ্গে 'ডাটা ভেরিফিকেশন অ্যান্ড ভ্যালিডেসন' নামের এক নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে। এদিকে ন্যাকের মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী কোনও বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘এ’ গ্রেড পেতে হলে ৪ পয়েন্টের মধ্যে ৩.০১-এর বেশি পয়েন্ট পেতে হয়। কিন্তু এবারে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় খাতায় উঠেছে ২.৭৯ পয়েন্ট। যার জেরে বি প্লাস গ্রেড জুটেছে তাদের কপালে। আর এখানেই বেড়েছে সমস্যা।