সংক্ষিপ্ত
দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় সবাই। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, হালকা-মাঝারি বৃষ্টি চলবে।
দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় সবাই। যদিও গত কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে পারদ অনেকটাই নামলেও আবারও গরমের কথা ভেবে নাকাল শহরবাসী। যেহারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে গত এপ্রিল মাস জুড়ে, তাতে কিছুতেই চিড়ে ভিজছে না। এদিকে তাপপ্রবাহ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিদেশ থেকে ফিরে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উল্লেখ্য, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্য়েই ওড়িশার ১৮ জেলায় সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, হালকা-মাঝারি বৃষ্টি চলবে। বৃষ্টির পূর্বভাস রয়েছে কলকাতা ও সংলগ্ন জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গেও।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণ আন্দামান সাগরের ওপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যেটা আগামী সমপ্তাহে ঘুর্ণিঝড়ে ঝড়ের আকার নিতে পারে। সপ্তাহের শুরুতেই অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলের দিতে এগিয়ে আসতে পারে। ঠিক তেমনই পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। যদিও আগে বলা হয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু শনিবার মৌসমভবন জানিয়েছে ঘর্ণিঝড় এগিয়ে আসতে পারে ভারতের দিকে। তবে ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলবর্তা এলাকাগুলির মতো বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি উপকূলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়া ব্যবস্থা উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওযার সম্ভাবনা রয়েছে। একটি নিম্মচাপ শক্তিশালী হওযার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। এটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তাহলে নাম রাখা হবে অশনি।
আরও পড়ুন, 'অর্জুন আত্মহত্যা করেছেন, প্রমাণ হলে ময়নাতদন্তকারীর চাকরি থাকবে ? ' প্রশ্ন ফিরহাদের
রবিবারের সন্ধ্যের মধ্য়ে এই নিম্নচাপ রেখাটি আরও শক্তিশালী ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে আগামী মঙ্গল থেকে শুক্রবারের মধ্যে এটির প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় ও ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই সময় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলবর্তী এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটার বেগেও ঝড় হতে পারে, সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। বিশেষজ্ঞরা আন্দাজ করেছেন, '১০ মে নাগাদ উড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণঝড়।' এই প্রসঙ্গে আইএমডি-র এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ৬ মে নিম্নচাপ তৈরি হবে। এরপর তা শক্তি সঞ্চয় করে আরও ঘণীভূত হবে। দক্ষিণ আন্দামান এবং বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায় সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। ওই একায় মৎসজীবীদের মূলত না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, কেন না আবহাওয়ার অনেক বদল ঘটবে।'
আরও পড়ুন, কে এই রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়াণা, কীভাবে অভিষেকের সঙ্গে পরিচয়
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতির সম্ভাবনা আগেই তৈরি হয়েছে। তীব্র দাবদাহের মধ্য়েই ঝড়-বৃষ্টি হওয়াতে স্বস্তি সারা বাংলায়। হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কালবৈশাখীহীন চৈত্র-বৈশাখ সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, তীব্র দাবদাহের অস্বস্তি কাটিয়ে, কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শহরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় আপাতত তাপপ্রবাহের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হবে না। তবে অস্বস্তিকর গরম বজায় থাকবে।
আরও পড়ুন, এলপিজির দাম চড়তেই কলকাতায় যাত্রীভাড়া বাড়াল অটোয়ালাদের একাংশ, জানুন কোন কোন রুটে
প্রসঙ্গত, শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় ছিল।উল্লেখ্য, এই সময় অন্য বছরগুলিতে তিন থেকে চারটি কালবৈশাখী হয়ে যায়। কিন্তু, এবছর এখনও পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে সবে একটা কালবৈশাখী হয়েছে। বিগত অনেকদিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। শীতের সময় উত্তরবঙ্গের থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বেশি হয়েছিল। কিন্তু, তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষবারের মতন বৃষ্টি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। তবে তারপর ফের বৃষ্টির প্রাণ জুড়িয়ে দেয় বঙ্গবাসীর। গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে দাবদাহের পরিস্থিতি কমবে। উত্তরবঙ্গে প্রকৃতি অনেকটাই অনুকূলে থাকবে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার-সহ বিভিন্ন সমতল এলাকায় দমকা হাওয়া এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিংপং সহ পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। পাবর্ত্য এলাকায় বৃষ্টি পরিমাণ কিছুটা বাড়বে।