সংক্ষিপ্ত
মন্ত্রীরা জেলে গেলে ভালো, শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর মন্তব্যে সরাসরি তৃণমূল নেতানেত্রীদের নামোল্লেখ। চূড়ান্ত অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল।
‘‘দল চোরদের কথা শুনবে। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতার লোক ডাকাতি করবে। আর আমরা চুপ থাকব। এই মন্ত্রিসভায় থাকব? এটা কি থাকা উচিত হবে? তা হলে আপনাকে পথ দেখতে হবে। না হলে আশ্রমে চলে যেতে হবে। না হলে আপনাকে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে।’’ তৃণমূলের একাধিক নেতানেত্রী নাম নিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় তোপ দাগলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো।
সম্প্রতি রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্তর একটি চাঞ্চল্যকর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়ায়। শ্রীকান্ত মাহাতোর অভিযোগ, উমা সোরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরত, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ এবং উত্তরা সিংহের মতো নেতানেত্রীরা ‘লুটেপুটে’ খাচ্ছেন, তারপরেও তৃণমূল এইসব নেতাদেরই ‘সম্পদ’ বলে মনে করছে। এই বক্তব্যের জেরে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। মন্তব্যটি প্রকাশ্যে আসার পর শ্রীকান্তকে শোকজও করেছে দল।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটিতে শ্রীকান্তকে বলতে দেখা যাচ্ছে, ‘‘আমাদের কি বাঁচার অধিকার থাকবে না? আমাদের নাগরিকত্ব কি থাকবে না? এটা আমরা বলতে চাই। আজ থেকে পরিকল্পনা করে জয়যাত্রা শুরু করব। আমরা পুলিশ এবং বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি জমা দেব। আমাদের নাগরিকত্ব, অধিকার বন্ধ করার ব্যবস্থা যদি করে, তা হলে আমরা কী করব? কী করা উচিত? সে জন্য পশ্চিমাঞ্চল নাগরিক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল কৃষক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল বুদ্ধিজীবী সমাজ আমরা তৈরি করব। আমরা মমতাদি পর্যন্ত যেতে চাই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ, সুব্রত বক্সীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাঁরা বুঝতে চাননি। খারাপ লোককেই তাঁরা ভালো লোক বলছেন। তা হলে আমরা বাঁচব কী করে? খারাপ লোককে তো খারাপ লোক বলতে হবে। আর ভালো লোককে ভালো লোক বলতে হবে। ভাল লোকের কথা শুনতে হবে। কিন্তু খারাপ লোকের কথা শুনছে।”
এর পরেই তাঁর মুখে শোনা যায় বহু তৃণমূল নেতানেত্রীর নাম, যাঁদের অধিকাংশই সারা বাংলার সুপরিচিত মুখ। সকলের বিরুদ্ধে জোর গলায় শ্রীকান্ত বলেন, “এখানে যদি দেবাদিদেব মহাদেব, উমা সরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরত, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ, উত্তরা সিংহ যারা লুটে পুটে খাচ্ছে তারা যদি সম্পদ হয়, তা হলে তো দল করা যাবে না। তারা যদি দলের সম্পদ হয়, তারা যদি টাকা ডাকাতি করে শালবনির টাকায়, টাঁকশালে টাকা ছাপায়, তা হলে মন্ত্রী জেলে গেলে ভাল আছে। না হলে লোকে দোষারোপ করে বলবে ওই মন্ত্রীরা সকলে চোর। বলছে তো।’’
শ্রীকান্তর এই ভিডিওর সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী কিছু কথাবার্তা বলেছেন, যা ভিডিও-র আকারে দলের কাছে পৌঁছেছে। যে কথাবার্তাগুলি একটু আপত্তিজনক। সেজন্য গত কাল দলের নির্দেশে শ্রীকান্ত মাহাতোকে শোকজ করা হয়েছে। আজ উনি জবাবও দিয়েছেন। উনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’’
আরও পড়ুন-
এসএসসির টাকায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয়ের জমি-বাড়ি-ব্যবসা? সিবিআইয়ের জালে প্রসন্ন রায়
আরও সম্পত্তি সুকন্যা মণ্ডলের নামে, অনুব্রত-কন্যার বহু জমিজমার হদিশ পেল সিবিআই
শ্বাসকষ্ট অর্শ ছাড়াও অনুব্রতর মেডিক্যাল রিপোর্টে বিবিধ জটিল সমস্যা, ওজন ছাড়িয়েছে ১০০ কেজি!