সংক্ষিপ্ত
বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করে শুরু হয় মিছিল। উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষর সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, জলপাইগুড়ি জেলার সম্পাদক অভিষেক মিত্র মজুমদার।
বাংলা ভাগের প্রতিবাদে পথে নামল বাংলাপক্ষ। শনিবার জলপাইগুড়িতে বিশাল মিছিল করলো বাংলা পক্ষ। মিছিলে বাঙালি রাজবংশীর পাশাপাশি অংশ নেয় শয়ে শয়ে ভূমিপুত্র। বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করে শুরু হয় মিছিল। উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষর সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, জলপাইগুড়ি জেলার সম্পাদক অভিষেক মিত্র মজুমদার। মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা সম্পাদক প্রবাল চক্রবর্তী ও জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সদস্য ও সমর্থকরা। স্থানীয়দের মধ্যেও মিছিল ঘিরে প্রবল উচ্ছ্বাস চোখে পড়ে। জলপাইগুড়ি শহরে সমাজপাড়া মোড়ে বিশাল সভাও করে বাংলা পক্ষ।
প্রকাশ্য সভাতেই বিজেপিকে তোপ দাগলেন গর্গ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বললেন,'বিজেপি বাংলাদেশের দালাল ও পশ্চিমবাংলার শত্রু। তাই বাংলাকে শুকিয়ে তিস্তার জল বাংলাদেশকে দিয়ে দিতে চায়। তারা নেপাল বর্ডার খোলা রেখে নেপাল থেকে বিদেশী ঢুকিয়ে ও বিহার-ইউপি থেকে বহিরাগত ঢুকিয়ে এই জেলা গুলোয় বাঙালি সহ ভূমিপুত্রদের সংখ্যালঘু করতে চায় এবং বাংলা ভাগ করতে চায়। বাংলা পক্ষ বাংলা ভাগ হতে দেবে না, তার জন্য প্রতিটা প্রান্তে লড়াই শুরু হয়ে গেছে।' পদ্ম শিবিরকে কটাক্ষ করে কৌশিক মাইতি বলেন,'বাংলা পক্ষ ভূমিপুত্রদের মধ্যে বিভেদ চায় না। বাংলা পক্ষ কলকাতা কেন্দ্রিকতা ধ্বংস করে প্রতিটা জেলার ও প্রতিটা ভূমিপুত্রর উন্নয়ন চায়। তাই আমরা দ্বিতীয় AIIMS চায়, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়িতে লোকাল ট্রেন চাই সহ নানা দাবিতে লড়ছে বাংলা পক্ষ। আমরা রক্ত দেব, কিন্তু বাংলা ভাগ হতে দেব না। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার সহ বাংলা জুড়ে লড়ছি।'
বাংলার উন্নয়নের জন্য ১০ দফা দাবিও পেশ করা হয়েছে বাংলা পক্ষর তরফে। এই দাবিগুলি হল -
- প্রতিটা রাজ্য সরকারি চাকরির পরীক্ষা কেন্দ্র প্রতিটা জেলা সদরে থাকতে হবে। দূরের জেলা থেকে কাউকে কলকাতা যেতে না হয়।
- বিহার, ইউপি বাংলার থেকে কম ট্যাক্স দিলেও বিহারে দুটো, ইউপিতে ৩ টা AIIMS আছে। কিন্তু বাংলায় একটা কেন? রায়গঞ্জ বা জলপাইগুড়িতে দ্বিতীয় AIIMS চায় বাংলা পক্ষ। এ ব্যাপারে বিজেপি সাংসদরা চুপ কেন?
- তিস্তার জল বাংলাদেশকে দিয়ে বাংলার উপরের দিকে ৮ টা জেলাকে শ্মশান বানানো যাবে না। তিস্তা জলবন্টন চুক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে বাংলা পক্ষ।
- NJP কে কেন্দ্র করে লোকাল ট্রেন নেটওয়ার্ক চালুর দাবিতে বাংলা পক্ষ লড়াই করছে৷ রেল আধিকারিকদের ইতিমধ্যে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে।
- কেন্দ্র সরকারের কাছে দাবি, বাংলা, হিন্দি, তামিল, নেপালী ইত্যাদি ভাষার সম মর্যাদার রাজবংশী ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তপশিলে যোগ করতে হবে।
- জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে ভূমিপুত্রদের কাজ ও চাকরি দিতে হবে। বিহার-ইউপি থেকে লোক আমদানি করা যাবে না।
- কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট ও কোচবিহার আরও তিনটি নতুন ট্রেনের দাবিতে আন্দোলন করছে বাংলা পক্ষ।
- দিল্লির দ্বারা বাংলায় হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
- শিলিগুড়ি মোড় কে চক করা হয়েছে, চক গুলিকে আবার মোড় করতে হবে।
- চিলা রায় ও ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার জন্মদিনে বাংলা জুড়ে সরকারি ছুটি দিতে হবে।
উল্লেখ্য বাংলা ভাগের বিরোধীতায় এর আগেও ১৯ শে জুন কলকাতায় এবং ৩ রা জুলাই শিলিগুড়িতে মহামিছিল করেছে বাংলা পক্ষ।