সংক্ষিপ্ত

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত আস্থা রাখলেন অনুব্রত মণ্ডলের ওপর। তবে বীরভূম দেখবেন ফিরহাদরা। কাজল শেখকেও সতর্ক করলেন তিনি।

 

বীরভূমে বা দিল্লি যেখানেই থাকুন না কেন বীরভূমের রাজনীতিতে শেষপর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলের ওপরেই ভরসা রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিহার জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলেই রেখে দিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির পদে। তবে ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক আর নরেন চক্রবর্তীকে রাজ্যের সবথেকে আলোচিত জেলার দেখভালেরও দায়িত্ব দিলেন। কিন্তু এই জেলা সম্পর্কে শেষ সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন বলেও জানিয়েছেন।

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় শুক্রবার কালীঘাটে জেলা ভিত্তিক বৈঠকের প্রথম দিন ছিল। এদিনই বীরভূমের রাজনৈতিক নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন বীরভূমের তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডেলের চরম বিরোধী হিসেবে পরিচিত নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। জেলার রাজনীতিকে গুঞ্জন কেষ্ট-কাজল সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। অনুব্রত অনুপস্থিতিতে কাজল শেখ নিজের জায়গা পাকা করতে উঠে পড়ে লেগেছেন বলেও তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন। কিন্তু এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কাজল শেখকে কার্যত সতর্ক করে দিয়েছেন। বলেছেন, দলের হয়ে যা বলার বলবেন বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। কাজল শেখকে সোকজ করার হুমকিও তৃণমূল নেত্রী দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। যদিও এই বিষয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে মুখ খুলেননি কাজল।

এদিনের দলীয় বৈঠকে কেষ্টর প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। মমতা অনুব্রত-কন্যা সুকন্যার পাশে থাকার কথা বলেছেন জেলার নেতাদের। সুকন্যার যাতে কোনও সমস্যা না হয় তাও দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে গরুপাচারকাণ্ডে তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের বাড়িতে একাই রয়েছে সুকন্যা। তিনি অবশ্য একাধিকবার ইডির হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন।

গরুপাচার-কাণ্ডে দিল্লির রাউস অ্যাভেনেউ কোর্ট অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তারপর থেকেই তিহার জেলে ঠাঁই হয়েছে তৃণমূল নেতার। সূত্রের খবর সেখানে তাঁর জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। বাকি কয়েদিদের মতই রাখা হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশে চিকিৎসা আর ওষুধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্রের খবর তিহার জেলে অনুব্রতর সঙ্গে থাকা কোনও ওষুধ নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। সেখানেই চিকিৎসকদের মাধ্যমে প্রেসকিপশন দেখে তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সূত্রের খবর অনুব্রতকে রাখা হয়েছে জেলের ৭ নম্বর সেলে। কারণ এখানেই রাখা হয় টাকা পাচার-কাণ্ডে ধৃতদের। এই সেলেই রয়েছে গরুপাচার-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ও অনুব্রত মণ্ডলের সহযোগী সেহগল হোসেন। তবে প্রথম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে মশার উৎপাতে ঘুম হয়নি বলেও জেল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেছেন দাপুটে তৃণমূল নেতা।

গরু পাচারকাণ্ডে দিল্লি যাত্রা এড়াতে অনেক চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। একের পর এক আদালতের দরজায় কড়া নেড়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি যাত্রা এড়াতে পারেনি। অনেক চেষ্টার পরে মঙ্গলবারই তাঁকে দিল্লি নিয়ে যেতে পেরেছিল ইডি। প্রথমে নিজেদের হেফাজতে রেখে জেরা করেছেন। গত মঙ্গলবার দিল্লির রাউস অ্যাভেনেউ কোর্টের নির্দেশে তিহার জেলে ঠাঁই হয় অনুব্রত মণ্ডলের। এবার অনুব্রত সামনে আশার আলো দিল্লি হাইকোর্ট। সেখানে যদি জামিন পান তাহলে আসানসোল সংশোধনাগারে ফিরতে পারবেন তিনি। আর্থাৎ নিজের রাজ্যে ফিরতে পারেবন।