সংক্ষিপ্ত
হাইকোর্টের একের পর এক কড়া নির্দেশের ধাক্কায় শাসকের গদি যখন টালমাটাল, তখন বিচারপতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
২০২২ সাল পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের জন্য একটি দুঃসময়ের বছর। বছরের প্রায় শুরুর দিক থেকেই প্রকাশ পেয়েছে বঙ্গের বহু দফতরের দুর্নীতির খবর। বছরের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয়ে গিয়েছেন রাজ্যের হেভিওয়েট নেতারা। চাঞ্চল্যকর খবরের পাশাপাশি রাজ্যবাসীর জন্য আশার খবরও আসছে একের পর এক। দুর্নীতি ঘোচাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে বহু নজিরবিহীন রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই রায়দাতাদের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাত এবং বর্তমানে ‘ট্রেন্ডিং’ একটি নাম অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক দুর্নীতি খোলসা করে স্বচ্ছ প্রশাসন ব্যবস্থার কাণ্ডারি হিসেবে নেপথ্যে অবিরাম কাজ করে চলেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দুর্নীতি নিয়ে তিনি যেরকম বরাবর কঠোর এবং স্পষ্টবাদী, আরেকদিকে ঠিক সেরকমভাবেই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে তিনি ঈশ্বরতুল্য। সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে বা আড্ডায় আলোচনায় যেমন বারবার উঠে আসছে বিচাপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম, তেমনই তাঁর নাম প্রণম্য হয়ে উঠছে শাসকদলের বিপক্ষ শিবিরের কাছেও। ফলত, না চাইতেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে বঙ্গের রাজনৈতিক মহলের সঙ্গে।
সরকারি কর্মচারী, বা চাকরিপ্রার্থী, বা বিভিন্ন দফতরের ভেতরকার গোলমাল নিয়ে হাইকোর্টের একের পর এক কড়া নির্দেশের ধাক্কায় শাসকের গদি যখন টালমাটাল, সেই পরিস্থিতিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিচারকার্যে তাঁকে ‘সমাজ সংস্কারক’-এর সঙ্গে তুলনা করলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
শুধুমাত্র দুর্নীতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাই নয়, চাকরিপ্রার্থীদের দাবি জেনে ন্যায্য বিচার দিয়ে চলেছেন বিচারপতি। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট সম্পর্কে সিবিআইয়ের কাছে যথাযথ তথ্যও দাবি করেছেন সঠিক সময়ে। এমনকি, হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের বক্তব্যও জেনে নিয়েছেন মনোযোগ সহকারে, তাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করছেন কিনা, সেই খোঁজও রাখছেন তদন্তকারীদের কাছ থেকে। অর্থাৎ, মামলার দুই পক্ষের কারুর প্রতিই আইন বহির্ভূত রায় দিচ্ছেন না অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কিন্তু, এই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই বারবার আক্রমণ হেনেছে শাসক শিবির। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অনেকবারই অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে রাজনীতির যোগ রয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে নির্দেশ দিচ্ছেন আদালতের বিচারপতি। উল্লেখযোগ্যভাবে, এক সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে নিয়েও সোচ্চার হয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শাসক শিবিরের বিরোধিতা করতে এবার সংবাদমাধ্যমের সামনেই আইনের ময়দানে নেমে পড়ল গেরুয়া শিবির। শুক্রবার বিচারপতির প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে রাজা রামমোহন রায়ের ছায়া দেখতে পাচ্ছি। সরাসরি হয়ত ভগবান বলতে পারছি না ঠিকই। তবে সংস্কারক তো বটেই। উনি সমাজ সংস্কারক হিসেবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এগিয়ে চলেছেন।’
আরও পড়ুন-
আইআইটি খড়গপুরে সুযোগ পেয়েছে মেধাবী ছোটন, খরচ জোগাতে সরকারের কাছে কাতর আর্জি ফেরিওয়ালা বাবার
ডিআরএম নয়, ভারতীয় রেলের প্ল্যাটফর্ম টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করবে কেন্দ্র সরকারই, বড়সড় ঘোষণার পরেই স্বস্তি যাত্রীদের
সপ্তাহ জুড়ে শুকনো আবহাওয়া, জলপাইগুড়ির চেয়েও কমে গেল কলকাতার তাপমাত্রা