সংক্ষিপ্ত
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগে বড়সড় বিস্ফোরণে মারা যান পূর্ব মেদিনীপুরের ৩ তৃণমূল নেতা-কর্মী। বোমা বাঁধা নিয়ে শুভেন্দু বনাম কুণালের টুইট-যুদ্ধ।
শনিবার কাঁথিতে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরেই সভা করতে চলেছেন শাসকদল তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, অভিষেক তাঁর সভাস্থলে পৌঁছনোর আগের রাতেই, অর্থাৎ, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির ভগবানপুরের দুই নম্বর ব্লকের ভূপতিনগর থানার অন্তর্গত অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রাম। বিস্ফোরণের ভয়াবহতার সাথে সাথে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতিও। কেন? কারণ, এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় তৃণমূল বুথ সভাপতির বাড়িতেই।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অর্জুননগর তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে শুক্রবার রাতে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। রাজকুমারের স্ত্রীর দাবি, এই নেতার সঙ্গে বোমা বাঁধার কাজে সহযোগিতা করছিলেন তাঁর দুই ভাই বিশ্বজিৎ গায়েন ও লালু। আচমকা বোমা বিস্ফোরণে শুক্রবার রাতে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে এবং সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণের তীব্রতায় মৃত্যু ঘটে তৃণমূল নেতা রাজকুমার, তাঁর ভাই তথা তৃণমূল কর্মী বিশ্বজিৎ গায়েন ও লালুর। ঘটনাস্থলে আরও চার জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই সম্পূর্ণ বিষয়টিকে হাতিয়ার করে শাসকের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ডভাবে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা। তাঁদের মধ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার এবং অন্য ২ জন গতকাল সন্ধ্যায় বোমা তৈরি করার সময় মারা গিয়েছেন। এই বোমাগুলি কাঁথিতে নিক্ষেপ করার উদ্দেশ্যে তৈরি হচ্ছিল। বোমা হল পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে সফল কুটির শিল্পজাত পণ্য এবং সারা বাংলা জুড়ে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এগুলি ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়।” শুধু তাইই নয়, বিস্ফোরণের তদন্তে এনআইএ-র (ভারত সরকারের জাতীয় তদন্ত সংস্থা) দাবি তুলে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে টুইটবার্তায় উল্লেখও করেছেন তিনি।
কিন্তু, বিরোধী শিবিরের বাক্যবাণ খুব সহজেই ঝেড়ে ফেলছে না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীর টুইটটি রিটুইট করে পালটা তোপ দেগেছেন। তাঁর দাবি, শুভেন্দু সম্মত হয়েছে যে, এই বোমাগুলি কাঁথিতেই নিক্ষেপ করার উদ্দেশ্যে তৈরি হচ্ছিল। তিনি সত্য কথা বলেছেন। কিন্তু, এগুলো কি আমাদের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের উপর আঘাত করার জন্যই প্রস্তুত করা হচ্ছিল?” এরপর তিনি লেখেন, “বিজেপি এবং শুভেন্দু হিংস্রতা এবং অগ্নিসংযোগের কিছু গুরুতর চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত।”
আরও পড়ুন-
শুভেন্দু অধিকারীর সভার আগে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির প্রস্তুতি বানচালের প্রচেষ্টা, ‘তৃণমূল ভয় পেয়েছে’, খোঁচা শুভেন্দুর
মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কীসের ইঙ্গিত?
কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা হওয়ার আগেই ঘটল অঘটন, তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রাম