সংক্ষিপ্ত

আসানসোল সংশোধনাগারে থাকাকালীন তাঁর শারীরিক অবস্থা যতটা নেতিবাচক দেখা গিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর চেহারার হালহকিত পালটে গিয়েছে বলেই বোঝা গেল। 

আদালতের নির্দেশের পরেও অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছে ইডি। নতুন করে ‘খুনের চেষ্টা’-র মামলায় জড়িয়ে আপাতত রাজ্য পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। প্রতিদিনের মতো বড়দিনেও কেষ্ট মণ্ডলকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল দুবরাজপুর থানার পুলিশ। রুটিন চেকআপ শেষে হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় বেশ খোশ মেজাজেই দেখা গেল অনুব্রতকে। তাঁর শরীরও বেশ ভালো রয়েছে বলেই মনে হয়েছে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠার সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা বলে গেলেন, “নতুন বছর, আনন্দ করো।”

তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন কেমন রয়েছে, তা জিজ্ঞেস করায় তিনি নিজেই জানালেন, আছি মোটামুটি। প্রেশারও ঠিকঠাকই রয়েছে। গায়ে শাল জড়িয়ে, দুইহাত পিছনে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হাসিমুখেই এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন অনুব্রত মণ্ডল। আসানসোল সংশোধনাগারে থাকাকালীন তাঁর শারীরিক অবস্থা যতটা নেতিবাচক দেখা গিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর চেহারার হালহকিত একেবারে পালটে গিয়েছে বলেই বোঝা গেল।

গরুপাচার মামলার তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে জেলবন্দি অনুব্রতকে বিশেষ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় ইডি। তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল ও দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে দফায় দফায় জেরা করার পর কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করতে না পারায় তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করা হয়েছিল।

অনেক বাধাবিপত্তি কাটিয়ে রাউস অ্যাভেনিউ আদালতের নির্দেশের পর যখন অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লিযাত্রা একেবারে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, ঠিক তার পরের দিন হঠাৎ করেই এক নতুন মামলায় দুবরাজপুর থানার পুলিশ ‘শোন অ্যারেস্ট’ করে অনুব্রতকে। শিবঠাকুর মণ্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডল নাকি অতীতে একবার তাঁর গলা টিপে ধরেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ ‘শোন অ্যারেস্ট’ করে কেষ্ট মণ্ডলকে। পরে আদালতের নির্দেশে ‘খুনের চেষ্টা’ করার দায়ে রাজ্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয় অনুব্রতকে। এর ফলে তাঁর দিল্লিযাত্রা আপাতত স্থগিত।

আসানসোল জেলে থাকাকালীন তাঁর একাধিকবার অসুস্থতার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। একবার তাঁর প্রচণ্ড বুকে ব্যথা হওয়ার দরুন তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হয় জেল কর্তৃপক্ষ। বেশ কয়েকবার সাংবাদিকদের সামনেও নিজের অসুস্থতার কথা বলতে শোনা গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। কিন্তু, বছরের শেষে রাজ্য পুলিশের হেফাজতে এসে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় অনেকটা স্বস্তিতে রাজ্যের শাসক শিবিরও। বহুদিন পর বড়দিনের উৎসবের সকালে চনমনে অনুব্রতকে ‘আনন্দ করো’ বলতে শুনে টের পাওয়া গেল তাঁর ভেতরকার মানসিক উচ্ছ্বাসও।


আরও পড়ুন-
কোমরে গোঁজা গুলি ভরা সেভেন এমএম বন্দুক, মধ্যরাতে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার সশস্ত্র দুষ্কৃতী
নারীদের ইচ্ছেমতো পোশাক পরিধানে বাধা, আফগানিস্তানে কাজে যাওয়াও বন্ধ করে দিল তালিবান
 ‘নাচিবি ঘিরি ঘিরি, গাহিবি গান’, বাঙালির বড়দিনের আলোয় ভাইরাল হল পার্ক স্ট্রিটের সান্তা-জুটির নাচ