সংক্ষিপ্ত

রাজ্যগুলিকে ইতিমধ্যেই জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার উপদেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আগাম সতর্কতা হিসাবে প্রতিষেধকের উপরেও জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। 

প্রায় ৩ মাস ধরে বাংলায় করোনার প্রতিষেধক পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরেও খুব বেশি প্রতিষেধক মজুত করা নেই। রিপোর্ট অনুযায়ী, বঙ্গের ৭৫ শতাংশ মানুষ এখনও বুস্টার বা সতর্কতামূলক ডোজ় নেননি। এ দিকে, করোনা নিয়ে আবার আতঙ্ক তৈরি হওয়ায় রাজ্যগুলিকে ইতিমধ্যেই জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার উপদেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আগাম সতর্কতা হিসাবে প্রতিষেধকের উপরেও জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু রাজ্যে যদি বুস্টার ডোজ না আসে, তাহলে, নতুন করে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য ভিড় বাড়লে তা কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা।

রাজ্যের এক স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। প্রতিষেধকের বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে এখনও নতুন করে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। যেমন আসবে, তেমন ব্যবস্থা করা হবে। জাতীয় নির্দেশিকা মেনেই সব কাজ করা হবে।’’

করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক বুস্টার ডোজ়ের ওপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই অনেক মানুষের মধ্যে বুস্টার ডোজ় নেওয়া নিয়ে তীব্র অনীহা দেখা গেছে। স্বাস্থ্য কর্মীদের তৎপরতায় বাড়ি বাড়ি ঘুরেও খুব বেশি মানুষকে টিকাকেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে, চিন সহ বেশ কয়েকটি দেশে ফের বাড়তে শুরু করেছে করোনা। ওমিক্রনের বিএফ.৭ ভ্যারিয়েন্টে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক আশঙ্কা প্রকাশ করে সতর্কবার্তা জারি করার পরে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, বঙ্গে মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ করোনার বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন। শুধু বাংলাতেই নয়, গোটা ভারতেই বুস্টার ডোজ় নেওয়ার চিত্রটি একই রকম। অনেক মানুষের প্রশ্ন, বুস্টার ডোজ় কি নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করবে?

ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বললেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সাম্প্রতিক ভ্যারিয়েন্টগুলির কয়েকটি যে হেতু অ্যান্টিবডিকে নিউট্রালাইজ় করার ক্ষমতা খর্ব করছে, তথা সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে পটু, তাই বুস্টার ডোজ় নিয়ে শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়ালেও, তা যে নিশ্চিত ভাবে কাজে আসবে, সেটা বলা যাচ্ছে না।’’ তবে তিনি এটাও বলছেন, ‘‘ক্রস প্রোটেকশনের নিয়মে সুরক্ষার সামান্য সম্ভাবনা থাকলেও তার সুফল নিতে হবে সকলকে। বিশেষত, বয়স্ক ও কোমর্বিডিটি আছে, এমন মানুষদের বুস্টার নিয়ে রাখা উচিত।’’

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্রের মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রতিষেধক। সেটির কার্যকারিতা কমে গিয়েছে ভাবার কোনও কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘‘যে স্ট্রেন এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেটি ওমিক্রনের উপ-প্রজাতি। তার বিরুদ্ধে চলতি প্রতিষেধকের বুস্টার ডোজ় ১০০ শতাংশ কাজ করবে কি না, সেটা যেমন নিশ্চিত নয়, তেমনই, কাজ করবে না, সেটাও বলা যায় না। যে স্ট্রেনই আসুক, কিছুটা হলেও তা কাজ করবে।’’


আরও পড়ুন-
ভারত জুড়ে করোনাভাইরাসের ব্যাপক আশঙ্কা, বাংলায় এসেও বিজেপির জনসভায় আসবেন না নরেন্দ্র মোদী
রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্কের মাঝেই ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠাচ্ছে পাকিস্তান, চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল রুশ সংবাদমাধ্যমে