সংক্ষিপ্ত
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় দিঘা যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন বহু পর্যটক। কার্যত খালি দিঘার হোটেলগুলিও। 'মোকা'র কতটা প্রভাব পড়তে পারে দিঘায়? ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে এখনও স্পষ্টভাবে কিছুই জানায়নি মৌসম ভবন।
উকেন্ডে কাছে পিঠে বেরাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাঙালির লিস্টে প্রথম নাম আসে দিঘার। ছুটির দিনগুলোতে তাই সাধারণত উপচে পড়া ভিড়ই দেখা যায় সৈকত শহরে। তবে এই সপ্তাহে ছবিটা একেবারে আলাদা। রবিবার ছুটির দিনে কার্যত ফাঁকা দিঘা, মন্দারমনি, শঙ্করপুরের সৈকত। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় দিঘা যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন বহু পর্যটক। কার্যত খালি দিঘার হোটেলগুলিও। 'মোকা'র কতটা প্রভাব পড়তে পারে দিঘায়? ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে এখনও স্পষ্টভাবে কিছুই জানায়নি মৌসম ভবন।
মৌসম ভবনের পক্ষ থেকে বাংলা ছাড়াও ওড়িশা ও বাংলাদেশ উপকূল দিয়েও বয়ে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোকা। এখনও পর্যন্ত ল্যান্ডফল নিয়ে কিছু জানানো না হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতেও প্রশাসনের তরফ থেকে প্রাথমিকভাবে নজরদারি শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মৌসম ভবন জানিয়েছিল, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে ৬ থেকে ৭ মে-র মধ্যে। এই ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে তা নিম্নচাপে পরিণত হবে ৮ থেকে ৯ মে-এর মধ্যে। এরপর এটি দারুণ শক্তি ধারণ করে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ১০ থেকে ১২ মে তারিখের মধ্যে এই গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। সেই ঘূর্ণিঝড় ১৪ মে থেকে ১৭ মে-র মধ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মায়ানমারের রাখাইন কুলের মাঝামাঝি কোথাও স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম 'মোকা' বলেও জানানো হয়।
বর্তমানে জানা যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি ৮ মে নাগাদ অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। তারপর সেটি বাংলাদেশ কিংবা মায়ানমার উপকূলে আগামী ১২ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে। যদিও এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত গতিপথ সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে যে কোনও মুহূর্তে এউ ঝড় মায়ানমার থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ওড়িশার মধ্যে যে কোনও উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, জলভাগে ঘূর্ণাবর্তের অবস্থান যত বেশি স্থায়ী হবে, তত বেশি শক্তি বাড়াবে নিম্নচাপ। এর প্রভাবে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং বাংলাদেশ উপকূলে। উত্তর ও দক্ষিণ, উভয় বঙ্গেই বৃষ্টি হবে যথেষ্ট পরিমাণে। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হবে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে। দক্ষিণবঙ্গের নয়টি জেলায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং কলকাতায় এই নিম্নচাপের প্রভাব পড়বে ভালোরকম। আগামী সপ্তাহের বুধবার প্রবল ঝড় হওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-
ঘূর্ণিঝড় মোচা বাংলা-ওড়িশায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে? ঘণ্টায় ৫০ কিমি বেগে বাতাস বইবে-জারি সতর্কতা
বাংলা, ওড়িশা নাকি মায়ানমার? কোনদিকে ঘুরবে ঘূর্ণিঝড় 'মোকা'র গতিপথ