সংক্ষিপ্ত

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ক্লাস নাইনের ছাত্রীর মৃত্যু। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক দিনের মধ্যেই ছাত্রীর মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা বৈদ্যবাটি পুরসভাকেই দায়ি করেছে।

উত্তম দত্ত, আবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এই রাজ্যে। এবার ডেঙ্গুর বলি এক কিশোরী। হুগলির বৈদ্যবাটির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী কায়নাত পারভীনের মৃত্যু হল ডেঙ্গুতে। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই শেষ হয়ে গেল একটি জীবন। হুগলি জেলা ইতিমধ্যেই ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। গত বুধবার উত্তরপাড়ার বাসিন্দা স্বপন ঘোষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গতকাল রাতে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে মারা যান পারভীন।

বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল বছর ১৫এর পারভীন। মৃতার মামা সঞ্জু হোসেন জানান,কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিল মেয়েটা। ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধও দেওয়া হচ্ছিল। রক্তপরীক্ষাও করা হয়। গতকাল রক্তের রিপোর্ট হাতে পেতেই হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিই। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রাতেই চিকিৎসা চলাকালীন আমার ভাগ্নী সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেল।

এদিকে এই মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকাবাসী রা ক্ষোভ উগরে দেয় বৈদ্যবাটি পুরসভার বিরুদ্ধে। পুরসভার গাফিলতের জন্যই ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঠিকঠাক স্প্রে করা হয়না। এলাকা অপরিস্কার থাকে। পুরসভা ঠিকঠাক কাজ করছে না বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা।

বিজেপির স্থানীয় নেতা স্নেহাংশু মোহন্ত তাতে বলেন, প্রথমত পুরসভা মশা নিধনের কোন ব্যবস্থাই ঠিকঠাক নেয়না। স্প্রে র কথা বাদ দিন এরা ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে চুন মেশায়। অন্যদিকে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাত বলেন, পুরোটাই বাজে কথা। যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মশা নিধনের কাজ চলে। আমাদের হেলথের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন কারোর জ্বর হয়েছে কিনা। অনেকেই জ্বর হলে বলছেন না। চেপে যাচ্ছেন। পরে সেটাই অনেকসময় মারাত্বক আকার ধারণ করে। উল্লেখ্য এখনও অবধি গোটা জেলায় ডেঙ্গুতে মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের মধ্যে আছেন উত্তরপাড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর যিনি আবার পুরসভায় কনজারভেন্সির দায়িত্বে আছেন সেই তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখার্জি। তিনি বর্তমানে সংকটজনক অবস্থায় নিউ আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ।

গতকাল রাজ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসেও অভিযোগ করেছিলেন রাজ্য ডেঙ্গুর তথ্য ঠিকমত দিচ্ছে না। পাল্টা রাজ্য সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিল ওয়েবসাইটের সমস্যা রয়েছে। ন্যাশানাল সেন্টার ফর ভেক্টর বোর্ন ডিজিজেস অ্যান্ট কন্ট্রোলের ওয়েবসাইট অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ডেঙ্গু সম্পর্কিত শেষ তথ্য আপলোড করেছিল গত ৩০ সেপ্টেম্বর। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৯। কোনও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কোনও মানুষের মৃত্যু হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে। কিন্তু তারপর রাজ্য সরকার ডেঙ্গু নিয়ে কোনও তথ্য আপলোড করেনি ওয়েবসাইটে। তবে একটি সরকারি সূত্রের দাবি এই মরশুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ হাজার।

আরও পড়ুনঃ

মৃত বাবাকে ফেরাতে ২ মাসের ছেলেকে নরবলির ছক! দিল্লি পুলিশের তৎপরতায় গ্রেফতার মহিলা

রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য, ঘরে-বাইরে চাপে পড়ে অখিল গিরি বললেন 'রাগের বশে এমন কথা'

গুজরাট নির্বাচনে ১২৫টি আসন পাবে কংগ্রেস, দলীয় ইস্তেহারে ১০ লক্ষ সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি