Digha News: জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর আগত পর্যটকের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে হোটেল, পরিবহণ ও খাদ্যের খরচ। তবে এই অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় খরচ ও সংবেদনশীল আচরণে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন দিঘা থেকে। যা স্থানীয় অর্থনীতির পক্ষেও ক্ষতিকর।

Digha News: এক সময় ধরা ছোয়ার মধ্যে সাশ্রয়ী সমুদ্রতট ছিল দিঘা। সাধারণ মানুষের কাছে 'উইকেন্ড গেটওয়ে' হিসেবে পরিচিত এই গন্তব্য আজ বহু পর্যটকের জন্য হয়ে উঠেছে ব্যয়বহুল, বিভ্রান্তিকর এবং খারাপ অভিজ্ঞতার উৎস। সম্প্রতি অক্ষয় তৃতীয়ায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর পর্যটকদের ভিড় যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে হোটেল ভাড়া, টোটো ভাড়া এবং নানা রকম অতিরিক্ত খরচ,যা অনেক পর্যটকের ঠিক তো অভিজ্ঞতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আগামী ২৭ জুন দিঘায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে প্রথম জগন্নাথ রথযাত্রা নতুন নির্মিত জগন্নাথ মন্দির থেকে। তবে এই উৎসবের আবহেই সরগরম দিঘা পর্যটন কেন্দ্র। আগে ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত টোটো ভাড়া ছিল জন প্রতি ২০ টাকা। এখন সেই ভাড়া বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। সমুদ্র থেকে দূরের গড়পড়তা হোটেলগুলোর নন-এসি রুম, যেগুলোর ভাড়া আগে ৫০০-৬০০ টাকা ছিল, এখন সেটাই চড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে ২০০০ টাকা।

পর্যটকদের অভিজ্ঞতা

১। হোটেল ভাড়া নিয়ে বিভ্রান্তি

দমদমের নাগেরবাজারের বাসিন্দা ও তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী মৌমিতা কর সরকার সম্প্রতি তাঁর মা-কে নিয়ে দিঘায় গিয়েছিলেন। আগে থেকেই হোটেল বুক করতে চাইলেও, সমুদ্র লাগোয়া হোটেলগুলো একেকটা রাত্রির জন্য ৬৫০০ টাকা চাইছে, যেখানে গত ডিসেম্বরে ভাড়া ছিল ৩৪০০ টাকা। হোটেলগুলোর দাবি, ঘর নেই। কিন্তু দিঘায় গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ঘর রয়েছে, তবে চড়া দামে। শেষমেশ অনেক খোঁজাখুঁজি করে সাড়ে চার হাজার টাকায় একটি রুম পেয়েছিলেন মৌমিতা। তাঁর মতে, এই ভাড়া অন্তত এক হাজার টাকা কম হওয়া উচিত ছিল।

২। টোটো চালকদের তিক্ত ব্যবহার

টোটো ভাড়া নিয়েও ক্ষোভ বেড়েছে। মাত্র এক কিলোমিটার দূরের জগন্নাথ মন্দিরে যেতে ১০০ টাকা করে ভাড়া দাবি করছে চালকেরা। অনেক যাত্রী জানাচ্ছেন, টোটোচালকেরা সরাসরি বলে দিচ্ছেন, "যেতে হলে চলুন, না হলে হেঁটে যান।" তাঁদের ব্যবহার নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

৩। খাবারের দোকানে প্রতারণা

বীরভূম থেকে আসা এক পর্যটক জানিয়েছেন, একটি সাধারণ হোটেলে মাছ-ভাতের দাম বলা হয়েছিল ১০০ টাকা। খাওয়ার পর দাবি করা হয় ১৫০ টাকা। কারণ হিসেবে বলা হয়, কাতলা মাছ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে রুই মাছই দেওয়া হয়েছিল। এমন অভিজ্ঞতা আরও অনেক পর্যটকের হয়েছে।

রথযাত্রা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির মরসুমে দিঘার পর্যটন সম্ভাবনা অনেক। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া, অসংবেদনশীল ব্যবহার চলতে থাকলে পর্যটকরা আর ফিরে আসবেনা। যা স্থানীয় অর্থনীতির পক্ষেও ক্ষতিকর।

এই পরিস্থিতিতে শনিবার দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। সংস্থার পক্ষে বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, হোটেল মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে। এমনকি পর্যটকদের কোনো অভিযোগ থাকলে অ্যাসোসিয়েশনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে জানানোর পরামর্শ দেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।