সংক্ষিপ্ত
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আবারও অশান্ত হতে পারে পাহাড়। একজোট হয়েই আদালা রাজ্যের দাবিতে সরব বিনয় তামাং,গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও হামরো পার্টি।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই আবার সক্রিয় হচ্ছে পাহাড়ের প্রো-গোর্খাল্যান্ড ইউনিটগুলি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও হামরো পার্টি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেক আগে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের জন্য আন্দোলন শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিনয় তামাং, প্রাক্তন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন। তিনি বলেছেন এবার আন্দোলন আরও জোরদার হবে।
বৃহস্পতিবার দার্জিলিং পাহাড়ে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার কারণে বনধ প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু প্রো-গোর্খাল্যান্ড ইউনিটের প্রতিনিধিরা জানিয়েছে বর্তমানে পরীক্ষার কারণে বনধ হবে না। গণআন্দোলন হবে। আগামী দিনে আন্দোলন আরও জোরদার হবে। সম্প্রতি রাজ্য বিধানসভায় বঙ্গবঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব পাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারই প্রতিবাদে বনধের ডাক দিয়েছিল বিনয় তামাংরা।
হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড পিটিআইকে জনিয়েছেন, 'আমরা পাহাড়ের মানুষের আকাঙ্খা পুরণের উদ্যোগ নিয়েছি। বিলটি যেভাবে দ্রুত পাশ করা হয়েছে তার বিরোধিতাও করি।' তিনি আরও বলেন পরীক্ষার কারণেই বনধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনশন আন্দোলন চলছে। তবে এর আগেও গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে অনশন-আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল পাহাড়। দার্জিলিং, কার্শিয়াং আর কালিম্পং-এর জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সম্প্রতি পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ দেখা দিয়েছে। তিন বিরোধী রাজনৈতিক নেতা এডওয়ার্ড, বিমল গুরুং, বিনয় তামাং গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে হাত মিলিয়েছেন। তাদের দাবি পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য। একই সঙ্গে ষষ্ঠ তফসিলের বাস্তবায়ন, যা উপজাতি অঞ্চলে স্বায়ত্বশাসনের অধিকার দেয় স্থানীয়দের হাতে।
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ের রাজনীতি অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। একটা সময় যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাতে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থন করেছিল পরে তাদের সঙ্গেও ঘাসফুল শিবিরের দূরত্ব বাড়ে। সেই সময় মোর্চা নেতা বিমল গুরুং ও রোশন গিরি এনডিএ-র সঙ্গে হাত মেলায়। পরবর্তীকালে আবার এনডিএ ছেড়ে তৃণমূলে পিরে আসে। সেই সময়ই তৃণমূলের সমর্থনে পাহাড়ে উঠে আসে অনিত থাপা-র ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। অনিত পরবর্তীকালে জিটিএর চেয়ারম্যান হন। অনিত থাপার বিজিপিএমও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সমর্থন করে জিটিএতে প্রথম সর্বসম্মত রেজোলিউশন পাশ করে।
তবে অনিত থাপাকে তৃণমূল কংগ্রেস বেশি গুরুত্ব দিয়ে মোর্চা ও হামরো পার্টিকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করেছে। হামরো পার্টির অভিযোগ , দার্জিলিং পোরসভা জয়ের পরেও তারে নির্চাচিত সদস্যদের ভাঙায়ে নিয়েছে অনিত থাপা। এই অবস্থায় অনিত থাপাকে একঘরে করে মোর্চার সঙ্গে হাত মিলিয়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন শুরু করেছে হামরে পার্টি। হামরো পার্টির দাবি তারাই একমাত্র পাহাড়বাসীর সমস্যা সমাধান করতে পারে। দূর করতে পারে তাদের বঞ্চনা। অজয় এডওয়ার্ড বলেছেন, 'দার্জিলিং-এর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমরা অবস্থান পরিবর্তন করেছে। বর্তমানে পাহাড়ে গণতন্ত্রের কোনও স্থান নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি। '
শুধু তৃণমূল নয়, বিজেপির ওপরেও আক্রোশ রয়েছে মোর্চা ও হামরো পার্টির। কারণ ২০০৯ সালে বিজেপি পাহাড়ে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আর সেই জন্যই মোর্চা ও হামরো পার্টির দাবি ২০২৪ সালের আগেই গোর্খাল্যান্ড ইস্যুই পাহাড়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে।
পাহাড়ের মানুষের গোর্খাল্যান্ডের দাবি দীর্ঘদিনের। এই দাবি প্রথম তুলেধরেছিলেন পাহাড়ের নেতা সুভাষ ঘিসিং। ১৯৮৬ সালে গোর্খা জাতীয় লিবারেশন ফ্রন্টের মাধ্যমেই গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। তেমনই দাবি বিশেষজ্ঞ মুনিশ তামাং-এর । তিনি আরও বলেন, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এখনও শক্তিশালী। কিন্তু হামরো পার্টি এখনও ততটা সক্রিয় নয়। পাশাপাশি তিনি বাম আমলে অর্থআৎ ১৯৮৮ সালের আগে সুভাষ ঘিসিংএর হিংস্র আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থাপন করা হয়েছিল হিল কাউন্সিল। সেখানে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১১ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা আত্মপ্রকাশ করে। সেই সময়ই পাহাড়ের নতুন নেতা হিসেবে উঠে আসেন বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা।
আরও পড়ুনঃ
Bollywood Gossip: সৎমা করিনা কাপুরকে কী নামে ডাকেন সারা আলি খান? রইল তাদের সম্পর্কের ইতিকথা
অ্যাডিনোভাইরাস থেকে সাবধান শিশুরা, কী করতে হবে জানালেন বিশেষ চিতিৎসক