সংক্ষিপ্ত
বিকেল পাঁচটা নাগাদ ক্যানিং পৌঁছে যান রাজ্যপাল । সেখানে প্রথম তিনি সেচ দফতর একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। তারপরই হিংসা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন সিভি আনন্দ বোস।
ভোট হিংসায় উত্তপ্ত ভাঙড়ের পর এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের গন্তব্য ছিল ক্যানিং। বুধবার থেকেই মনোনয়নপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ক্যানিং। এই এলাকায় এক তৃণমূল ও এক জন আইএসএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি দুই রাজনৈতিক দলের। শনিবার নিজের নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ক্যানিং গেলেন। সেখানে তিনি একটি প্রশাসিক বৈঠক করেন। পাশাপাশি সন্ত্রাস কবলিত এলাকাগুলিও পরিদর্শন করেন।
এদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ ক্যানিং পৌঁছে যান রাজ্যপাল । সেখানে প্রথম তিনি সেচ দফতর একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এই বৈঠকের পরই রাজ্যপাল যান ক্যানিং-এর হিংসা বিধ্বস্ত এলাকায়। বুধবার ক্যানিং-এর সবথেকে বেশি হিংসা ছড়িয়েছিল হাসপাতাল মোড়। সেখানে রাজ্যপাল যান। যাওয়ার আগে তিনি বিরোধী দলগুলি রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানায়। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল শাসকদল বিডিও অফিস নিয়ন্ত্রণ করছে। অনেককেই মনোনয়ন দাখিল করতে দেওয়া হয়নি। তাই মনোনয়ন দাখিলের জন্য তাঁরা অতিরিক্ত সময়ও চেয়ে নেন রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যপাল ক্যানিং থেকেও শান্তিপূর্ণ আর অবাধ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন গণতন্ত্রের জন্য শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রয়োজন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে হওয়া হিংসার কড়া সমালোচনা রাজ্যপালের। 'গণতন্ত্রে এই ধরনের রাজনৈতিক হিংসা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়'। তিনি আরও বলেন, '।'আমি নিজের কানে শুনেছি ও দেখেছি মানুষের আতঙ্ক কোন পর্যায়ে'। কিছু মানুষ আম জনতার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, এটা চলবে না। রাজনৈতিক হিংসায় চারিদিকে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে'। 'মানুষকে তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার ভয়-ডরহীনভাবে প্রয়োগ করতে দিতে হবে'বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান।
শনিবার সকালে রাজ্যপাল রাজভবনে জানিয়েছিলেন রাজ্য সরকার ও রাজভবনের মধ্যে দুর্দান্ত সম্পর্ক রয়েছে। স্পর্শকাতর বিষয়গুলি তাঁরা আলোচনা করে সমাধানের সূত্র খোঁজেন। কিন্তু রাজ্যপালের ভাঙড়ের পরে ক্যানিং সফর নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ রীতিমত সমালোচনা করেন। তিনি বলেন রাজ্যপাল বিজেপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন।
যাইহোক বুধবার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যানিং। এই এলাকায় আইএসএফ কর্মীদের সঙ্গেও তৃণমূলের সংঘাত বাধে। যাইহোক গুলি বোমা রীতিমত অর্গিগর্ভ হয় ক্যানিং। মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লার দাবি নিহত তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। এই সংঘর্ষের জেরে এসডিপিএ-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মীও আহত হয়েছিল।
এর আগে গত কাল রাজ্যপাল রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত ভাঙড়ে গিয়েছিলেন। সেখানে বিজয়গঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেন। ভাঙড় ১ ও ২ নম্বর বিডিও অফিসেও যান। সেখানে কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে। পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভাব অভিযোগও শোনেন। ভাঙড় থেকেই রাজ্যপাল শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষেই সওয়াল করেন। সূত্রের খবর নবান্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্যপালের এই সক্রিয়তা মোটেও ভাল চোখে দেখছে না। অন্যদিকে রাজ্যপালের হিংসা বিধ্বস্ত এলাকায় সফর তৃণমূলেরও অস্বস্তি বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ
Weather News: খাতায় কমলে বর্ষা ঢুকলেও এখনও তাপপ্রবাহ আর আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি অব্যাহত বঙ্গে
প্রশিক্ষণ শেষের আগেই বাড়তি ৯ হাজার পুলিশ ভোট ময়দানে , মমতার দফতরের বিরুদ্ধে ঘোরতর অভিযোগ শুভেন্দুর
মনোনয়নপত্র পরীক্ষা ঘিরে ধুন্ধুমার দিনহাটা, নীশিথের কনভয়ে তীর ছোঁড়ার অভিযোগ উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে