চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার মাত্র ১৫ ঘন্টা আগে মৃত্যু হয় এক প্রধানশিক্ষকের। হাইকোর্ট প্রধানশিক্ষকের ছেলেকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মরত অবস্থায় কোনও কর্মীর মৃত্যু হলে পরিবারের সদস্য চাকরি পেতে পারেন।
বয়স ৬০ হতে বাকি ছিল আর ১৫ ঘন্টা। তার আগে অর্থাৎ চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার ঠিক আগে মৃত্যু হয় প্রধানশিক্ষকের। সময়ের এই ফারাকেও প্রধানশিক্ষক বাবার চাকরি ছেলেকে দিতে বলল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই প্রধানশিক্ষকের বয়স ছিল ৫৯ বছর ১১ মাস ২৯ দিন। আর নিয়ম অনুসারে, কর্মরত অবস্থায় কোনও কর্মী প্রয়াত হলে তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য সন্তান অথবা স্ত্রী চাকরির সুযোগ পেয়ে থাকেন।
এদিকে ১৫ ঘন্টা পরে বয়স ৬০ পূর্ণ হলে তাঁর অবসরের সময় হত। নিয়ম মোতাবেক চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে প্রধানশিক্ষকের। এমতাবস্থায় তাঁর পরিবার অনুকম্পানিত নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য। প্রধানশিক্ষকের ছেলেকে চাকরি দেওয়া নিয়ে বিবেচনা করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে।
হাই কোর্ট জানায়, মামলাকারী প্রধানশিক্ষকের ছেলের তথ্য ও নথি সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠাবেন জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাঁর অনুকম্পানিত চাকরিতে নিয়োগের সুপারিশ দেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
১৯৮১ সালে ১৯ নভেম্বর পূর্ব বর্ধমানে একটি স্কুলে চাকরি পান মহম্মদ কোরবান হোসেন। ২০০২ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক হন। স্কুলে চাকরির ক্ষেত্রে ৬০ বছরে অবসর নেওয়ার। ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি তাঁর বয়স ৬০ বছর হত। কিন্তু, তার ঠিক আগের দিন প্রয়াত হন। ১ জানুয়ারি সকাল ৮টা ১৩ মিনিটে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স ৬০ হতে আর ১৫ ঘন্টা বাকি ছিল।
গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি বাবার চাকরি চেয়ে আবেদন করে ছেলে মানিকুল হোসেন। সেই মামলার রায় এল প্রকাশ্যে। দু পক্ষের বক্তব্য শুনে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। জানান, তাঁর চাকরি পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলে জানায় আদালত। কারণ ওই ব্যক্তি ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে প্রয়াত হন। ১ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হত ৬০।
