আগামী ৩ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
এবার প্রায় ৫ লক্ষ ৯ হাজার পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক দিতে চলেছে। গত বছরের তুলনায় যা অনেকটাই কম। বুধবার, সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়ে দিলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। গত ২০২৩ সালে, মাধ্যমিক পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪২৮ জন।
তার মধ্যে থেকে একাদশের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার জন। কিন্তু এই বছর পরীক্ষা দিচ্ছে ৫ লক্ষ ৯ হাজার পরীক্ষার্থী। অর্থাৎ, প্রায় ৫৫ হাজার পরীক্ষার্থী কম। মানে আবারও সেই ড্রপআউট। প্রতি বছর মাধ্যমিকের উত্তীর্ণের সংখ্যার থেকে প্রায় ১০ শতাংশ পড়ুয়া কম রেজিস্ট্রেশন করছে উচ্চ মাধ্যমিকে।
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক এই কম রেজিস্ট্রেশনের কারণ হিসাবে জানিয়েছেন, ক্লাস ইলেভেনে রেজিস্ট্রেশনের সময় এবং একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার সময়, অনেক পড়ুয়াই চাকরির দিকে এগিয়ে যান। সেইসঙ্গে, স্কুলছুটও হয়ে যায় বেশ কিছুজন।
অনেক পড়ুয়া আবার ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্যান্য বিভাগের পড়াশোনা শুরু করে দেন। এই শেষ বছর পরীক্ষার্থীরা রেগুলার ভিত্তিতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। ফলের, পরের বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক হবে সেমিস্টার পদ্ধতিতে।
এমনকি, চলতি বছর থেকে অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে। গত বছর দেখা গেছিল যে, ভুল পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে চলে গেছিল বেশ কিছু পড়ুয়া। তারপরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আরও একাধিক নিয়ম চালু করা হচ্ছে। যে ঘরে যতজন পরীক্ষার্থী রয়েছে, সেই সংখ্যা অনুযায়ী ওই ঘরেই প্রশ্নপত্র খোলা হবে।
অর্থাৎ, সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হবে এবং ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র খোলা হবে পরীক্ষার্থীদের সামনেই। প্রশ্নপত্রে সিরিয়াল নম্বর দেওয়া থাকবে নিরাপত্তার জন্য। সেই সিরিয়াল নম্বর আবার পরীক্ষার্থীদের নিজেদের উত্তরপত্রও লিখতে হবে। এছাড়াও QR কোড এবং বারকোডও থাকছে।
আর মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য থাকবে মেটাল ডিটেক্টর। এছাড়াও গোপন আরও একটি বিষয় রয়েছে সতর্কতার জন্য, তা অবশ্য পরীক্ষার দিনই জানতে পারবেন পড়ুয়ারা। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় এবং যেখানে প্রশ্নপত্র থাকবে, সেখানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
এদিকে ৫ লক্ষ ৯ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। ৪৫.৩২ শতাংশ ছেলে এবং ৫৪.৬৮ শতাংশ মেয়ে। ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা ৪৭৬৭১ জন বেশি। মোট ২৩টি জেলায় ২০৮৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ৫২৮ জন বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থী রাইটার এবং অতিরিক্ত সময় সহ পরীক্ষা দিচ্ছেন। এছাড়া ১৩৬টি কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসেবে ধরা হয়েছে। প্রতি ২৫ জন পড়ুয়া পিছু এক =জন করে পরিদর্শক রাখা হচ্ছে।
আর এই প্রথম ডেটা সায়েন্স এবং কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার উপর পরীক্ষা হবে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাতে ৩০ জন এবং ডেটা সায়েন্সে ৯ জন পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রথম বছর বলেই এই সংখ্যা এতটা কম। এমনটাই জানিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। মোট ৬২টি বিষয়ের পরীক্ষা হবে ১৫টি ভাষায়।
আগামী ৩ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা। শুরু হবে সকাল ১০টা থেকে এবং চলবে ১টা ১৫ পর্যন্ত। অন্যদিকে, কারিগরী বিষয়ের পরীক্ষার সময়সীমা থাকবে ২ ঘণ্টা। এই সময় উচ্চমাধ্যমিক সংক্রান্ত কোনও সমস্যার কথা জানাতে হলে চালু থাকছে হেল্পলাইন নম্বর ০৩৩২৩৩৭০৭৯২- ২৩৩৭৯৬৬১।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
