সংক্ষিপ্ত
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার কোর কমিটি গঠন করেন। নতুন কোর কমিটিতে তিন নেতাকে স্থান দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কোর কমিটিতে নেওয়া হয়েছে, কাজল শেখ, শতীব্দী রায়, অসিত মালকে। বীরভূমের রাজনীতিতে কাজল শেখ অনুব্রতর বিপরীত লবি বলেও পরিচিত।
অনুব্রত হীন বীরভূমে প্রথম রাতেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বীরভূমে তৃণমূলের জেলা কোর কমিটিতে তিনি জায়গা করে দিয়েছিলেন কাজল শেখ, শতাব্দী রায় আর অসিত মালকে। বীরভূমের রাজনীতিতে গুঞ্জন - তবে কি মমতা অনুব্রতকে ছেঁটে ফেলতে চাইছেন? যদিও এই প্রশ্ন উত্তর দেবে সময়। কিন্তু বর্তমানে অনুব্রত মণ্ডল অনুপস্থিত। তাঁর যে ঘনিষ্টরা ছিল তাদের থেকে বিররীত লবি অনেকটাই বেশি শক্তিশালী। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট , আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। সব মিলিয়ে রাজ্যা রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বীরভূম। আর সেই কারণে মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাজল শেখ, শতাব্দীদের নিয়ে এসেছেন কোর কমিটিতে। এমনটাও বলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা।
শতাব্দী রায়, বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের দীর্ঘ দিনের সাংসদ। অনুব্রত- ম্যাজিকে তিনি দিল্লি গেলেও বীরভূমের রাজনীতিতে তিনি তাঁর বিপরীত লবি। সম্প্রতি দিদির দূত হয়ে নিজের সংসদীয় এলাকায় গিয়ে একাধিকবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই সময় অনেকেই বলেছিল কেষ্টাবিহীন বীরভূমে প্রকট হচ্ছে তৃণমূলের সংকট। আর সেই সংকট ঢাকতেই দ্রুত দাওয়াই দিয়েছেন মমতা।
কাজল শেখ, অসিত মাল থেকে শুরু করে অশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়- এরা জেলার রাজনীতিতে সকলেই অনুব্রতর বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। অনুব্রত বিহীন বীরভূমে ধীরে ধীরে এদের দাপট বাড়ছে বলেও মনে করছেন অনেকে। আর সেই কারণেই মমতা অনুব্রত বিরুদ্ধ লবিতে সামনে নিয়ে আসছেন। যদি ভোটের আগে অনুব্রত সিবিআই বা ইডির জাল থেকে ছাড়া পায় তাহলে খেলা ঘুরে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। কাজল শেখের দাদা কেতুগ্রামের বিধায়ক শেহনাজ শেখ। যদিও বীরভূমের সঙ্গেই কেতুগ্রাম-মঙ্গলকোট এলাকার দায়িত্বও ছিল অনুব্রতর হাতে। কিন্তু এই এলাকায় এখন একচ্ছত্র রাজ চলছে কাজল শেখের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট হিসেবে বরাবরই পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল। প্রকাশ্যেই মমতা তাঁকে কেষ্টা বলে ডাকেন। গরু পাচারকাণ্ডে জেলে যাওয়ার সাত মাস পরেও বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যা নিয়ে একাধিকবার বিজেপি তৃণমূলকে নিশানা করেছেন। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বেও জানেনন বীরভূম মানেই অনুব্রত। আর অনুব্রত মানেই বীরভূম। কিন্ত ভোট বড় বালাই। আর সেই কারণেই মমতা বীরভূমের নির্বাচনী প্রস্তুতি নিজে হাতেই শুরু করেছেন।
বীরভূমের ভোট মানেই অনুব্রত মণ্ডলের 'চড়াম চড়াম' বা 'গুড় বাতাসা'। কিন্তু এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে ছবিটা একদম অন্য। একাধিক ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে আসছে দলীয় কোন্দল। যার আঁচ পড়তে শুরু করেছে তৃণমূলের সংগঠনে। আর সেই আঁচ থেকে রক্ষা করতেই মমতার ট্রাম্প কার্ড হতে পারেন শতাব্দী রায়, কাজল শেখ, অসিত মালের মত নেতারা।
আরও পড়ুনঃ
আজ আবার মমতার নিশানায় বিশ্বভারতী? মালদা থেকে ফিরে পড়ুয়া-প্রাক্তনীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী
বীরভূমের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক মমতার, কাজল শেখ-সহ নতুন তিন জনের ঠাঁই কোর কমিটিতে