সংক্ষিপ্ত
ভিডিওতে রাম মন্দির উদ্বোধনীর দিন হিন্দুদের ‘গোমাংস খাওয়ার’ সমর্থনে যুক্তি দিয়েছেন ওই শিক্ষক । যা ঘিরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় ।
হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার হাই স্কুলের একজন মুসলমান শিক্ষক। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । ভিডিওতে রাম মন্দির উদ্বোধনীর দিন হিন্দুদের ‘গোমাংস খাওয়ার’ সমর্থনে যুক্তি দিয়েছেন ওই শিক্ষক । যা ঘিরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় । স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী নেতা কাজল গোস্বামী উক্ত শিক্ষকের ভিডিওটি নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন।
নিজের পোষ্টে কাজল গোস্বামী লিখেছেন, ’নাম হলো সাদ্দাম হোসেন । মালদা জেলার কালিয়াচক-৩ এর বীরনগর হাই স্কুলের শিক্ষক। একজন শিক্ষক হয়ে এই জেহাদী বরাহনন্দন যে ভাবে রামায়নের অপব্যাখা, আর রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিনে যে ভাবে সকল হিন্দুদের গরু খাওয়ার বিধান দিয়েছে, সেইক্ষেত্রে প্রশাসনকে এই জেহাদীর অবিলম্বে গ্রেপ্তার আর শাস্তি বিধানের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । এই বিষয়ে প্রশাসন কোনওরূপ অবহেলা বা বিলম্বিত না করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানাই। সনাতনী সৈনিক হিসেবে এইরুপ অন্যায় আর ভুলকথন মেনে নেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই উন্মাদ জেহাদীকে পুলিশ হেফাজতে না নেওয়া হলে এই ৪৮ ঘন্টা অতিক্রান্ত হলে আমি অন্যান্য সনাতনীদের নিয়ে বৈষ্ণৱনগর থানার সামনে আমরন অনশনে বসবো । সনাতনের ধর্ম রক্ষার্থে জীবন পর্যন্ত দিতে রাজি আছি।’
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ওই শিক্ষককে বলতে শোনা গেছে, ‘রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন প্রত্যেক হিন্দুভাইরা কি অযোধ্যায় গিয়ে গরুর মাংস খাবে ? অবশ্যই খাওয়া উচিত । কারণ, রাম যখন বনবাসে গিয়েছিল, তখন সীতা প্রার্থনা করেছিল, এটা রামায়ণের ২১৮ তম পৃষ্ঠায় পাওয়া যায় । সীতা প্রার্থনা করেছিল যে, রাম যদি সুস্থভাবে অযোধ্যায় ফিরে আসে , তাহলে সে অসংখ্য গরু উৎসর্গ করবে । তাহলে রামায়ণ থেকে একটা ভালো জিনিস পাওয়া যাচ্ছে যে , ভালো কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলে গরু উৎসর্গ করা উচিত । তাই আমি হিন্দু ভাইদের বলব যে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যদিও এটা নিষিদ্ধ হিন্দু ধর্মে । তাই রামমন্দির উদ্বোধনের কাজ যদি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, তাহলে হিন্দুদের গরু উৎসর্গ করা উচিত ও গরুর মাংস ভক্ষণ করা উচিত ।’ যদিও উক্ত ভিডিওটির কোনও সত্যতা যাচাই করা হয়নি। তবে, ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পেজেও শেয়ার করা হয়েছে।
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন স্কুলে গিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে জানা গেছে। একজন ব্যক্তি উক্ত শিক্ষকের সমর্থনে কথা বললে অন্য সবাই মিলে তাঁকে গণধোলাই দেওয়া হয়। যদিও, সেই সময় স্কুলে ছিলেন না ওই শিক্ষক।
কাজল গোস্বামী অন্য একটি ভিডিওতে অভিযোগ করেছেন যে, সাদ্দাম হোসেন নামের ওই শিক্ষক ইতিপূর্বেও হিন্দু ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন কটুক্তি করেছিল । কিন্তু পুলিশ প্রসাশন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি । এবারেও রামায়ণের ভুল ব্যাখ্যা করে ঘৃণা ছড়িয়েছেন ওই শিক্ষক। রামায়নে বর্ণিত গরু উৎসর্গ নয়, পরন্তু গোমাতার পূজা করার কথা বলা হয়েছে বলে দাবি হিন্দু নেতার। অভিযুক্ত শিক্ষককে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন কাজল গোস্বামী। তারপর অভিযুক্তের গ্রেফতার হওয়ার খবর জানিয়েছে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন তিনি।