সংক্ষিপ্ত

মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ প্রয়োগ করল কমিশন। ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি থাকছে একাধিক নিয়ম।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হতেই অশান্তির চিত্র দেখা গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উঠে আসছে একের পর অভিযোগ। পাশাপাশি খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনায় আরও তীব্র হয়েছে উত্তেজনা। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আবহে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে বড় পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন। বাকি দিনগুলি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ হয় সেই কারণে এবার ১৪৪ ধারা জারি করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রবিবার এমনটাই জানান হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যেই জেলার ডিএম, এসপিদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কেন্দ্রের ১ কিলোমিটারের মধ্যে জারি করতে হবে ১৪৪ ধারা। বেলা ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এই বিধি।

মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ প্রয়োগ করল কমিশন। ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি থাকছে একাধিক নিয়ম। মনোনয়ন জমা দিতে প্রার্থীর সঙ্গে এক জন সহোযোগীর ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি আছে। উল্লেখ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিয়ে মামলার শুনানি আজই কলকাতা হাই কোর্টে। শুনানির ঠিক আগে কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তির ঘটনায় রাজ্য সরকারের তীব্র নিন্দা করেছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। খরদায় কংগ্রেস কর্মীর খুনের ঘটনায়ও ক্ষোভ উগরে দেন বাম নেতা। তিনি বলেছেন,'যেভাবে গতকাল খরদায় বুলেটবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছেন কংগ্রেস কর্মী তাতে বোঝা যায় ব্যালটের থেকে তৃণমূলের বুলেট, বোমা, বন্দুকে আগ্রহ বেশি। তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গকে বারুদের স্তুপের উপর দাঁড় করিয়েছে। মানুষ চায় গণতন্ত্র, ব্যালট। তৃণমূল চায় গুলি, বোমা, বন্দুক, বুলেট।' এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী স্পষ্ট জানালেন এবিষয় তাঁর কোনও আগ্রহ নেই। তাঁর কথায়,'দেখুন বিরোধী দলনেতা তৃণমূল থেকে এখন বিজেপির নেতা হয়েছেন। তিনি দিল্লিতে গিয়েছেন, অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন, তাঁদের মধ্যে কী ফুঁসফাঁস কথা হয়েছে তাতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। বিজেপি নেতা বিজেপি নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। আর অমিত শাহ তো তৃণমূলের বিরোধিতা করতে আগ্রহী নন। বরং তৃণমূলের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে ৩৫টা আসন পাওয়া যায় কি না তার অপেক্ষায় আছেন।' তাঁর দাবি মনোনয়ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে শাসকদলের থেকে এগিয়ে বিরোধীরা। সুজনের কথায়, 'আমাদের কর্মীরা অনেক জায়গাতেই মনোনয়ন জমা দিয়েছে এবং তার থেকেও বেশি জায়গায় মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও দিতে পারেনি, কারণ নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত নয়। ছয় দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের গাফিলতিতে একদিন নষ্ট। এখন প্রশ্ন এই নষ্ট হবে জেনেই কি তৃণমূল বাহিনী আসেনি?' শুধু তাই নয় একাধিক জায়গায় মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন,'গতকাল মুর্শিদাবাদের রানিনগরে যখন আমাদের কর্মীরা মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন তখন তৃণমূলের নেতা বাইরের থেকে বাহিনী নিয়ে এসে আক্রমণ করেন। ঘটনায় হতচকিত হয়ে যায় কর্মীরা। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে রুখে দাঁড়িয়েছিল স্থানীয় মানুষেরা। যারা আক্রমণ করতে এসেছিল তাদের কার্যত তাড়া খেতে পালাতে হয়েছে, তৃণমূলকে তাড়া খেয়ে পালাতে হয়েছে।' সুজনের সংযোজন,'রানিনগর দেখে যেন তৃণমূল বোঝে যে মানুষ চায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে, সেটা যদি বাইরের থেকে বাহিনী এনে নষ্ট করার চেষ্টা করতে চায় তাহলে যেন রানিনগরের চেহারাটা মনে রাখে।'