সংক্ষিপ্ত
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গেছে। প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে প্রত্যেকটা দলই। এই অবস্থায় কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে কংগ্রেস, সিপিআই(এম), তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি।
পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৩ ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন রাজীব সিংহ। আগামী ৮ জুলাই পঞ্চয়েত নির্বাচন। ফল প্রকাশ ১১ জুলাই। মনোনয়ন দাখিলের কাজ শুরু হয়েছে আজ অর্থাৎ ৯ জুন থেকে। যাইহোক পঞ্চায়েত নির্বাচন মানেই তিনটি নির্বাচন একসঙ্গে। পঞ্চায়েত বা গ্রামসভা, ব্লক বা সমিতি আর জেলা পরিষদ। মূল কথা একেকটি জেলা পরিষদ দখল করে রাখাই রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির মুখ্য উদ্দেশ্য। যদিও বর্তমানে রাজ্যের প্রায় সবকটি জেলা পরিষদই নিজেদের দখলে রেখেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবার সেই ছবি ঘরিয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর বিজেপি। যদিও প্রথম থেকেই লড়াইয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পয়েছে বাম - কংগ্রেস। কারণ এই দুটি দল জোটবেঁধে লড়াই করবে না একা একা লড়াই করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলঃ
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী জেলা পরিষদে তৃণমূল কংগ্রেসের ধারে কাছে কেউ নেই। ৮২৫টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ৫৯০টি। অনেক অনেক পিছিয়ে অর্থাৎ ২২টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। ৬টি আসন পেয়েছ তৃতীয় স্থানে কংগ্রেস। একটা যে যে বামেরা ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় রাজ করতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাদের নাম ও নিশান ছিল না। তবে এই রাজ্যে দলবদল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই পরবর্তীকালে তৃণমূলের আসন সংখ্যা আরও বেড়েছে।
পঞ্চায়েত সমিতি রাজ্যের ৯২১৭টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ছিল ৪৯৭৪টি আসন। বিজেপির ৭৬০ আর বামেদের ১১৭টি আসন। কংগ্রেসের দখলে ছিল ১৩৩টি আসন।
প্রায়ই একই ছবি গ্রামসভার ক্ষেত্রে রাড্যে ৪৮৬৫০টি গ্রাম সভার আসনের মধ্যে ২১২৬৯টি আসনই তৃণমূলের দখলে। বিজেপি ৫৭৭৬টি আসন পেয়ে দ্বিতীয়। সিপিআইএর জথলে ৩৪, সিপিআই(এম)এর দখলে ১৪৮৬টি আসন। কংগ্রেসের দখলে ছিল ১০৬৫টি আসন। যদিও পরবর্তীকালে দলবদলের কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গেছে।
এই তথ্য পশ্চিমবঙ্গ বই থেকে।
তৃণমূল কংগ্রেসঃ
এবার অতীত ছেড়ে আসি বর্তমানে। চলতি বছরও ভোট যুদ্ধ তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে বলেও মনে করছেন অনেকে। কারণ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি এখনও তেমনভাবে প্রচার শুরু করতে পারেনি। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিত্যদিনই প্রচারে আলোতে ছিলেন জনসংযোগ যাত্রাকে কেন্দ্র করে। তবে তৃণমূলের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হল গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। অভিষেকের যাত্রার মধ্যে যা যেমন একাধিক জেলাতে প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু তৃণমূল দ্রুত সেই ক্ষত মেরামতির চেষ্টা করেছে। তারপর প্রচারেই অন্যান্য দলের তুলনায় এই রাজ্যে ২০১১ সালে থেকে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট উপলক্ষ্যে প্রায় গোটা রাজ্য চষে ফেলেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কথায় এবার তাঁর সঙ্গে থাকবে অভিষেক।
বিজেপিঃ
পঞ্চায়েত নির্বাচন কোনও বড় নেতার ক্যারিশ্মায় হয় না। স্থানীয় সাংগাঠনিক শক্তির ওপর নির্ভর করেই এই নির্বাচন হয়। সেখানে রাজ্যের অন্যান্য দলগুলির তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের নেতারা অনেক বেশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল। যদিও কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতা রাজ্য নেতারা পাবেন মনেও করা হচ্ছে। কারণ ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্য বিজেপির কাছে অ্যাসিড টেস্ট।
সিপিএম ও বামফ্রন্টঃ
বর্তমানে অনেকটাই প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে বামফ্রন্ট। তবে বাম দলগুলির মধ্যে সিপিআই(এম) সবথেকে বেশি সক্রিয়। সাংগঠনিকভাবেও শক্তিশালী। রাজ্যে একাধিক দুর্নীতির ইস্যু তুলে ধরে সংগঠনকে আরও মজবুত করতে চাইছে সিপিএম। এই অবস্থায যোগ্য সহযোগীর বড়ই অভাব। তবে সিপিএম-এর তরুণ তুর্কীরা কিছুটা হলেও বিরোধীদের বেগ দেবে বলেও আশা করছে রাজনৈতিক মহল।
কংগ্রেসঃ
অধীর চৌধুরী নির্ভর। দলবদলের ধাক্কায় রীতিমত দিশেহারা। কিন্তু নতুন করে বামেদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়া যাত্রা গোটা দেশেই কমবেশি সাড়া ফেলেছে। এই রাজ্যে রাহুলের প্রভাব কি তা কিছুটা হলেও টের পাওয়া যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে।
আরও পড়ুনঃ
৪ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা অভিষেক পত্নী রুজিরাকে, তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ করেন দিল্লির দুই কর্তা
কলকাতায় স্বস্তির বৃষ্টি কবে ? দীর্ঘ টালবাহানের পরে অবশেষে কেরলে পা রাখল বর্ষা