সংক্ষিপ্ত
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেই রায় ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দিল। এক সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ।
আপাতত স্বস্তিতে রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সিবিআই তদন্ত নির্দেশ দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি উলুবেড়িয়া এক নম্বর ব্লকের বিডিও নীলাদ্রি শেখর দে-র বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্রের নথি বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল। মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের। তাতেই সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিডিওর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। তাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল মামলাটি। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে না আদালত। আদালত জানিয়েছে, এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশের প্রয়োজন নেই। তদন্তের ভার আদালত দিয়েছে রাজ্য পুলিশের ওপর। আদালতের নির্দেশ হল, 'অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নজরদারিতে এই মামলার তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ। এক সদস্যের এই কমিশনকে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে রাজ্যকে।
হাওড়ার উলুবেড়িয়ার ১ নম্বর ব্লকের সিপিআই(এম) প্রার্থী কাশ্মীরা বিবি ও অনুজা বিবি মনোনয়নপত্র বিকৃত করা হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সিপিআই(এম)। সরকার কর্মী ও রাজ্য নিপর্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। মামলাকারীদের দাবি ছিল ওবিসি হওয়া সত্ত্বেও মনোনয়নপত্রের চেকলিস্টে তা উল্লেখ করা হয়নি। আর সেই কারণ দেখিয়ে স্ক্রুটিনির সময় তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। এই মর্মে তাঁরা বিডিও অফিসে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অভিযোগ গ্রহণ করেছে সরকার দফতর। তারপরই তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে উঠেছিল মামলাটি। তিনি সরাসরি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাই রাজ্যের কোনও এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করা যাবে না। তারপরই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। তাতেই রাজ্য সরকার আপত্তি জানায়। অমৃতা সিংহের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে এমনিতেই উত্তাল রাজ্য। মনোনয়ন পর্ব দাখিলের পরেই তা নিয়ে অশান্তি চলছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে মনোনয়ন পত্র তুলে নিতে জোর দেওয়া, বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি পরবর্তীকালে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও বিরোধীদের অভিযোগ। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু মনোনয়নপর্ব ঘিরে যে আশান্ত হয়েছিল রাজ্য তার আঁচ গিয়ে পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। আর সেই কারণে সুপ্রিম কোর্টও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার প্রতি জেলার জন্য মাত্র এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে। তাই বিরোধীদের পাশাপাশি যারা ভোট কর্মীর দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরও প্রশ্ন পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ
এক দিনের নোটিশে আইনি বিয়ে, সামাজিক বিয়ের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে রাজ্য