সংক্ষিপ্ত

অবশেষে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেলেন নৌশাদ সিদ্দিকি। রাজ্যে ও কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে নিরাপত্তা পেলেন কোর্টের নির্দেশে।

 

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী পেলেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রবিবার বিকেলে ফুরফুরা শরিফে তাঁর পৈত্রিক বাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে সাত জন সিআইএসএফ জওয়ান। যাঁরা তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়ে রীতিমত স্বস্তিতে আসএসএফ-র একমাত্র বিধায়ক নৌশাদ। তবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।

নৌশাদ নিজেই জানিয়েছেন তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছেন। কিন্তু কোন ক্যাটাগরির নিরাপত্তা তিনি পেয়েছেন তা তিনি নিজেই জানেন না বলেও জানিয়েছেন ভাঙড়ের বিধায়ক। তবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, প্রথমে তিনি রাজ্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর নিরাপত্তার জন্য বিন্দুমাত্র ব্যবস্থা করেনি। তিনি আরও বলেন বিধায়ক হিসেবে তাঁর যেটুকু নিরাপত্তা পাওয়া প্রয়োজন তারও ব্যবস্থা করেনি রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় প্রাণনাশের আশঙ্কায় নৌশাদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লেখেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনও উত্তর পাননি। পাশাপাশি নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হন। আদালত তাঁর বক্তব্য শুনে তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেন। রবিবার নওশাদ জানিয়েছেন, শুধুমাত্র নিজের জন্য নয়, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে গোটা ভাঙড়ের বাসিন্দাদের জন্য নিরাপত্তা চান। কিন্ত ভাঙড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ করেন। যদিও ভাঙড় সহ গোটা রাজ্যেই নিরাপত্তা বাহিনী পাঠাচ্ছে কেন্দ্রী। শনিবারই ভাঙড়ে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে , তারা ইতিমধ্যেই রুটমার্চ শুরু করেছে। মনোনয়ন পর্ব থেকেই উত্তাল ছিল ভাঙড়। এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও সরব ছিলেন তিনি। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আইএসএফ প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন যদি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমনটাও বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

মনোনয়ন পর্বকে কেন্দ্র করে ভাঙড় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল আরএসএফ ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তিন জনের মৃত্যু হয়। বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে। যুযুধান আইএসএফ ও তৃণমূল কংগ্রেস একে অপরের দিকে দায় ঠেলতেই ব্যস্ত। প্রশাসন নীরব বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এই অবস্থায় মাত্র এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখে কিছুটা হলেও আস্বস্ত স্থানীয়রা। শুধু ভাঙড় নয়, ইতিমধ্যে রাজ্যের একাধিক জেলাতেই এসে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কারণ আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক জেলার জন্য মাত্র এক কোম্পানি করেই কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল। সেই অর্থে প্রথম পর্বে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা। পরবর্তীকালে হাইকোর্টের চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে বাধ্য হয় কমিশন। এই দিনই দিনহাটা ও কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে গেছে। অন্যদিকে বীরভূমের জন্য প্রায় ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আনা হচ্ছে। গোটা রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শান্তি বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই অনুযায়ী রাজ্যে ৩৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাচ্ছে কেন্দ্র।

যদিও রাজ্য সরকার একলপ্তে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর। কিন্তু একসঙ্গে এত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে পারবে না বলেও সূত্রের খবর। শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে ৩১৫ কোম্পানি কোন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। শনিবারও রাজ্যে কয়েক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। রবিবারও আরও দফায় রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ

এক দিনের নোটিশে আইনি বিয়ে, সামাজিক বিয়ের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে রাজ্য

পিরামিডের দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, গিজার পিরামিড খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন তিনি

'খাবার জল নেই, বাড়ি নেই, ত্রিপল চেয়েও পাইনি, ভোট প্রচারে অনুব্রত-হীন বীরভূমে ক্ষোভের মুখে শতাব্দী