সংক্ষিপ্ত
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পাটনা বৈঠক সমস্যা তৈরি করছে বাম-কংগ্রেস আর তৃণমূল শিবিরে। পাটনা বৈঠকেই অস্ত্র করছে বিজেপি। তাতেই সাফল্য দেখতে পাচ্ছে গেরুয়া শিবির।
পাটনায় বিরধীদের বৈঠক- এক মঞ্চে হাজির ছিলেন রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন সিপিএম-এর সীতারাম ইয়েচুরি আর সিপিআই নেতা ডি রাজা। ২০২৪ সালের বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের এটাই ছিল প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু এই বৈঠকেই এই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রীতিমত গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস আর সিপিআই(এম) তথা বামেদের। এই রাজ্যে বর্তমানে বাম - কংগ্রেস এক জোট হয়েছে। খাতায় কলমে জোট না হলেও ঐক্যবদ্ধ হয়েই লড়াইয়ের পরিকল্পনা দুই দলের। মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি আর তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু পাটনায় এক মঞ্চে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূলের উপস্থিতি বিজেপি অস্ত্র হিয়েবে ব্যবহার করতে চলেছে।
তৃণমূলের প্রথম ও প্রধান বিরোধী দল কে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি বাম-কংগ্রেসের থেকে অনেকটাই এগিয়ে হিসেবে নিজেদের দাবি করেছে পাটনার মঞ্চে বিরোধী দলগুলিকে ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে। যা রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বাম আর কংগ্রেসকে। বিজেপি ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছে তৃণমূলের আসল প্রতিপক্ষ গেরুয়া শিবির। কারণ বাম আর কংগ্রেস বাংলায় কুস্তি করছে আর দিল্লিতে দোস্তি করছে- এটাই বিজেপির বর্তমান স্লোগান। যাইহোক এখনও পর্যন্ত বামেরা কোনও উত্তর দেয়নি। কিন্তু কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী রবিবারই বলে দিয়েছেন পটনার বৈঠক ছিল অনেকটা বিয়ে বাড়ির আমন্ত্রণের মত। সেখানে কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল তাই কংগ্রেস গিয়েছিল। পাল্টা বিজেপির উত্তর ছিল সেইজন্যই পাটনার মঞ্চ থেকেই রাহুল গান্ধীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ লালু প্রসাদ যাদব।
যাইহোক পাটনার বৈঠক যে তৃণমূলের কাছেও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দুজনের কথা বলার ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কারণ রাজ্যে অধীরের নেতৃত্বে কংগ্রেস ক্রমাগত তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। মনোয়নয় পর্ব ঘিরে রাজ্যের একাধিক জায়গায় যুযুধান কংগ্রেস-তৃণমূল। মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার অভিযোগ -সহ মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে কংগ্রেস। সেখানে একমঞ্চে রাহুল -মমতার ছবি যথেষ্ট বিড়ম্বনা তৈরি করেছে কংগ্রেসের কাছে।
অন্যদিকে দীর্ঘ দিন ধরেই এই রাজ্যে মমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ সিপিএম। বাম জমানার অবসানের পরেও তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম-এর লড়াই এই রাজ্যে অম্য মাত্রা এনে দেয়। বর্তমানে বামেরা বিধায়নসভায় শূন্য। লোকসভাতেও প্রতিনিধি নেই। তাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক জনসভা থেকে বিজেপির পাশাপাশি বামেদেরও আক্রমণ করেন। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার সময়ও মমতার আক্রমণের লক্ষ্যে থাকে বামেরা। তাই পটনার মঞ্চে বামেদের উপস্থিতি মমতা তথা তৃণমূলকেও অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।
যে বিজেপিকে সমস্যা ফেলতে পাটনায় মিলিতে হয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সেই পাটনা বৈঠক থেকে এই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেয়ে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুনঃ
এক দিনের নোটিশে আইনি বিয়ে, সামাজিক বিয়ের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে রাজ্য
'৬ মুসলিম দেশে বোমা হামলা তাঁর সময়', ওবামার মুসলিম মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া নির্মালার