সংক্ষিপ্ত

শাহজাহান শেখ পেরিয়ে সন্দেশখালির হেনস্থার গল্প এখন আরও বড় আকার ধারণ করেছে। তারই মধ্যে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলছেন মহিলারা। 

এখনও নেভেনি সন্দেশখালির (Sandeshkhali) আগুন। বরং যত সময় গড়াচ্ছে আরও ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ, অভিজ্ঞতার কথা সামনে উঠে আসছে। শাহজাহান, রেশন দুর্নীতি থেকে শুরু হয়ে দীর্ঘদিন ধরে নারী নির্যাতনের অভিযোগ! রাজ্যের ওই এলাকার মহিলাদের আর্তনাদ শুনে গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে সকলে। লোকসভা ভোটের আগে বাংলার গন্ডি পেরিয়ে সন্দেশখালি ইস্যু এখন জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু।

 

গত তিন সপ্তাহ ধরে সংবাদ শিরোনামে উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালি। তৃণমূল নেতাদের (TMC Leaders) বিরুদ্ধে লাগাতার অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বেশ কিছুদিন ধরে রাস্তায় নেমেছেন সন্দেশখালির মানুষেরা। চলতি মাসের শুরুতেও দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামের মহিলারা। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ এবং তার দুই ঘনিষ্ঠ নেতা শিবু হাজরা আর উত্তমের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগে জ্বলে ওঠে গোটা এলাকা।

প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শাহজাহান, সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি শিবু হাজরা, জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দার-সহ একাধিক নেতাদের বিরুদ্ধে পথে নামেন সন্দেশখালির মহিলারা। তাদের অভিযোগ, শেখ শাহাজাহানের মত গ্রামে এরম আরও অনেক গুন্ডা রয়েছে, যাদের অত্যাচারে এতদিনে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে গ্রামের মেয়েদের। বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে মহিলারা বলেন, ওরা মেয়েদের কোনও সম্মান দেয়নি। মেয়েদের শেষ করে ফেলেছে। রাত সাড়ে দশটার সময়ে মেয়েদেরকে উঠিয়ে আনত পার্টি অফিসে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় শেখ শাহজাহানদের সহ বাকি গুন্ডাদের বিরুদ্ধে একজোট হতে বাধ্য হন সন্দেশখালির মহিলারা।

দীর্ঘদিন যাবৎ হতে থাকা নির্যাতনের বিরুদ্ধে লাঠি, বাঁশ, গাছের ডাল হাতে রাস্তায় নেমেছেন সাহসী মহিলারা। এবার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রামের মহিলাদের তোলা সমস্ত অভিযোগে মান্যতা দিলেন গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রধান, গ্রামের শিক্ষিত মহিলাদের প্রতিনিধি। তবে তিনি যেই ঘটনার বললেন তা শরীরের রক্ত জল করে দেওয়ার মত।

এক প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান বলেন, “বাচ্চাকাচ্চা থেকে শুরু করে বউ-ঝি রাতে ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারে না। রাত দুটোর সময়ে বলছে, ওমুক জায়গায় যেতে হবে। মিটিং মিছিল করতে হবে। না গেলেই সাদা শাড়ি হাতে ধরিয়ে দেবে। স্বামী ছেলে মেয়ে সন্তান সবাইকে নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটাতে হচ্ছে। তাদের ওপর অত্যাচারের হত।” প্রধান বলেন, “দিনের পর দিন এই অত্যাচার চলেছে। আমরা শিক্ষিত বাড়ির বউরা সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে বেরোই না।”

বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, “একটা কাজ চাইতে গেলে শর্ত দেওয়া হয় যে আগে ওদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, যে ওরা যে বলবে, সেটা করতে হবে। তবেই কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে। ” তবে রাত দুটোয় কিসের মিটিং? কেন ওতো রাতেই ডাকা হত? এই কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক মহিলা উত্তর দিয়ে বলেন, “বোঝো না তোমরা। কীসের মিটিং। কেন বাড়ির বউদের কেন নিয়ে যায় রাত দুটোর সময়ে! আমরা সেসব নোংরা কথা কথা মুখে নিতে পারছি না। ভাল ভাল মেয়েদের বেছে বেছে পেয়ে…”