Mount Everest Summit: প্রতি বছরই সারা বিশ্বের অনেক পর্বতারোহী মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে নেপালে যান। সবাই যে সাফল্য পান, এমন মোটেই নয়। অনেকেই বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে গিয়ে বিপদে পড়েন। এবার প্রাণ হারালেন এক বাঙালি।
Death at Mount Everest: মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে প্রাণ হারালেন এক বঙ্গসন্তান। মৃত সুব্রত ঘোষ (৪৫) নদিয়া জেলার রানাঘাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠের পাড়ার বাসিন্দা। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা কাপাসাটি মিলনবিথী হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বৃহস্পতিবার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের (Mount Everest) শীর্ষে পৌঁছন সুব্রত। তাঁর সঙ্গে এই অভিযানে ছিলেন রানাঘাটের অপর এক শিক্ষিকা রুম্পা দাস। রুম্পা বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করে নিরাপদে শিবিরে ফিরে আসেন। কিন্তু সুব্রতর খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গিয়েছে, তাঁর অক্সিজেন ফুরিয়ে গিয়েছিল। ১০ মে নেপালের দিকে বেস ক্যাম্প থেকে উপরের ক্যাম্পে উঠে আসেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছন। এই অভিযানে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। এই কারণেই ফেরার সময় বিপদ ঘটে যায়। শুক্রবার সকালে সুব্রতর আত্মীয়দের কাছে মোবাইল ফোনে একটি বার্তা আসে, 'সুব্রত আর নেই।' তবে পরিবারের তরফ থেকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। যদিও খবর পাওয়া গিয়েছে, হিলারি স্টেপের কাছ থেকে সুব্রতর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সুব্রতর মৃত্যুতে শোকাহত মাউন্ট এভারেস্টজয়ী মলয় মুখোপাধ্যায়
হাওড়ার পর্বতারোহী এবং মাউন্ট এভারেস্টজয়ী মলয় মুখোপাধ্যায় রানাঘাটের এই শিক্ষকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে মলয় জানিয়েছেন, 'সুব্রতর সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। অনেকবার দেখা হয়েছে। কয়েকদিন আগেও দেখা হয়েছিল। অত্যন্ত ভদ্রলোক ছিল। খুব ভালো ব্যবহার ছিল। ওর এভাবে মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক।' ঠিক কী হয়েছিল? মলয় জানালেন, 'গতকাল থেকে এখনও পর্যন্ত যা জানতে পেরেছি, ঝোড়ো বাতাস ছিল। আবহাওয়া সাথ দেয়নি। এই কারণেই হয়তো সুব্রতর এই পরিণতি হল। তবে যে ঘটনাই ঘটে থাকুক না কেন, ওর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক।'
ভুলের খেসারত দিতে হল সুব্রতকে?
সুব্রতর মৃত্যু প্রসঙ্গে মলয় আরও বলেছেন, 'আমাদের গুরু সবসময় বলতেন, মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে দেরি করতে নেই। সকালবেলাই অভিযানে বেরিয়ে পড়তে হবে। তারপর যত দ্রুত সম্ভব নেমে আসতে হবে। সুব্রত অভিযানে বেরোতে অনেক দেরি করে ফেলেছিল। ও পেশাদার পর্বতারোহী ছিল না। এই কারণেই হয়তো ভুল করে ফেলেছিল। পাহাড়ে যে কোনও অভিযানে অভিজ্ঞতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞতার অভাবের চরম মূল্য দিতে হল সুব্রতকে। ওর মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি নিজের অভিযানের কথা ভাবছিলাম। আমারও যদি বরফের মধ্যে পা আটকে যেত, ঠিক সময়ে নেমে আসতে না পারতাম, তাহলে ওর মতোই পরিণতি হতে পারত।' সুব্রতর মৃত্যুতে শুধু পরিবারই নয়, সারা বাংলার পর্বতারোহীদের মধ্যে শোকের আবহ।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


