সংক্ষিপ্ত
বিধানসভায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে সৌজন্য দেখা গিয়েছিল শুক্রবার, শনিবারই তা গায়েব হয়ে যায়। ঠাকুরনগরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হুংকার শুভেন্দু অধিকারীর।
বিধানসভায় সৌজন্য সাক্ষাতের এক দিন পরেই নিজের রূপে ফিরে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী। চড়া সুরেই আক্রময়ণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনদরে সিএএ-এর সমর্থনে একটি জনসভায় উপস্থিত হয়ে শুভেন্দু বলেন,'স্নেহের ভাই পাস্ট টেন্স। আমি যে প্রণাম করেছি প্রমাণ করুন।'এখানেই শেষ করেননি বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
শনিবার ঠাকুরনগরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একটি জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিবি ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুডো দেন। একান্তে বৈঠক করেন শান্তনু ঠাকূরের সঙ্গে। তারপরই সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তিনি সংসদীয় ব্যবস্থা জানেন। বিরোধিতাকও করতে জানেন। তৃণমূল জানে না বলেও দাবি করেন।
এদিন ঠাকুরনগরে সিএএ মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। নিজের থুতু নিজেই চাটছেন।' শুভেন্দু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ' প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী' করে দেবেন বলেও হুংকার দিয়েছেন। শুভেন্দু বলে, 'মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে আমি বলে যাচ্ছি , ওনাকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করে ছাড়ব। ' শুভেন্দু আরও বলেন, 'গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করব।'
গতকাল শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চায়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে চা খেতে গিয়েছিলেন। যা নিয়ে অনেকেই বলেছিল রাজ্যে সৌজন্যের রাজনীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কিন্তু অনেকে আবার দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রমাণ করেছেন। কিন্তু এদিন সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন 'প্রণাম করেছি এটা প্রমাণ করুন।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর ভাষণের সময় দলীয় বিধায়কদের রীতিমত ধমক দিয়ে বলেন, 'কেউ বাধা দেবে না। সবাই চুপ করে থাকো।' কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকারর পর আবরও গোলমাল শুরু হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত বিধায়কদের সতর্ক করে দেন। একই ঘটনা ঘটেছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের বক্তব্য় রাখার সময়ও। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। সৌজন্যের আরও বাকি রয়েছে।
যাইহোক এদিন শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিক তৃণমূল নেতা বলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েও রাজ্যে সৌজন্যের রাজনীতির বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছেন। সেখানে চরম অসৌজন্য দেখাচ্ছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, বিরোধী দলনেতা যে কথা বলেছেন তা চরম অসৌজপূর্ণ। শুভেন্দু ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুনঃ
বঙ্গ বিধানসভায় সৌজন্যের 'চা', মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে হাজির শুভেন্দু অধিকারী
দল বদলের পর থেকেই মমতাকে নিশানা শুভেন্দুর , দেখুন ১০টি বিতর্কিত মন্তব্য