সংক্ষিপ্ত

জনসভা থেকে শুরু করে দলীয় কর্মিসভা- একাধিক জায়গায় শুভেন্দু অধিকারী নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কখনও উত্তর দিয়েছেন মমতা। কখনও আবার নীরব থেকেছেন।

 

একটা সময় মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ নেতাদের তালিকায় প্রথম সারিতে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতার হাত ধরে সাংসদ হয়েছেন। হয়েছেন এই রাজ্যের মন্ত্রীও। তৃণমূলের নেতা হিসেবে উঠে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু ছন্দপতন হয় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। ২২ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়ে দল ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারী। আর তারপর থেকেই মমতা বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন শুভেন্দু। আসুন দেখেনি সেরকমই কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্যঃ

১. দল বদলের কারণঃ

একটি জনসভায় দল বদল করে নতুন দল গঠন না করে বিজেপিতে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন, 'আমি অবিবাহিত। তাই আমার ভাইপো সেই দলের নেতা হত, এই জন্য আঞ্চলিক দল বানাইনি। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিজেপিতে গিয়েছি। ওঁরা আমাকে আদর আর সম্মান জানিয়ে দলে নিয়েছে।'

২. দল ছাড়ার পর খোলা চিঠিতে আক্রমণ 'তৃণমূলে পচন ধরে গেছে। গত ১০ বছরে দলে কোনও পরিবর্তন হয়নি।' শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল ব্যক্তিগত স্বার্থে তৃণমূল চলছে।

৩. ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে নাম না করে শুভেন্দুর নিশানা মুখ্যমন্ত্রীকে। বলেন, 'তোলামূল (তৃণমূল)কে হারানোর জন্য ত্রিপুরার বাসিন্দাদের ধন্যবাদ'।

৪. নন্দীগ্রামে জয় পাওয়ার পরই শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'নন্দীগ্রামে বেগমকে হারিয়ে রায়দিঘিতে প্রনাম করতে এসেছি। বেগম ভেবেছিলেন নন্দীগ্রামে ২৭ শতাংশ ভোট নিয়ে জিতবেন। উনি জানেন না রাতরাতি কীভাবে ৭৩ শতাংশ ভোট এক হয়ে গেছে।'

৫.নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারেও মমতাকে ধর্ম নিয়ে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, 'ভেজাল হিন্দু! পদবিটা ব্যানার্জি হলে নিজেকে হিন্দু বলতে হচ্ছে কেন? এখব উনি আর ইনশাল্লাহ বলছেন না। বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন শুধু হিন্দু ধর্ম বোঝেন। আমার ধর্ম মানবতা।' পরে অবশ্য মমতাকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন হিন্দুত্ব নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবেন কিনা।

৬. ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে কাঁথি পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগে জেরা করেছে রাজ্য সরকার। যা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন শুভেন্দু। বলেছিলেন, 'কিচ্ছু করতে পারবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সুদে আসলে ফিরিয়ে দেবে অধিকারী পরিবার।'

৭. প্রাক্তন আমলা দীপক ঘোষের বই হাতে তুলে নিয়েও মমতাকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সার্টিফিকেটে ভুয়ো। মমতা নিজের বয়স নিয়েও মিথ্যা করেন বলেন বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু।

৮. ডেঙ্গি ন্য়ে মমতাকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, 'মশাদের সরকার আমাদের নেই দরকার।' এই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মমতা বিধানসভায় কেন বিবৃতি দিচ্ছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু।

৯. নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও মমতাকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, 'সাত হাজার টাকার প্লেটে বিজয়া করছেন মমতা। আর চাকরি না পাওয়া ছেলে মেয়েরা গাছের তলায় বসে আছে। আমি বলব মমতার নামে যখন চিঠি পাওয়া গেছে তখন কেন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। '

১০. কেন্দ্রীয় সারকার এই রাজ্যে টাকা বন্ধ করে দেবে বলেও হুমকি দেন শুভেন্দু। বলেন, এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা রাজ্যের সরকারি প্রকল্পে খরচ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের রাজনীতি করছেন।