কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, 'ট্যাংরার দে পরিবারের তিন মহিলার খুনের ঘটনায় বাইরের কেউ জড়িত নন। দুই ভাই প্রণয় আর প্রসূন জড়িত রয়েছে।' 

ট্যাংরার দে পরিবারের তিন সদস্য খুনের ঘটনায় হাতের কাটা দাগ নিয়ে রহস্য ক্রমশই দানা বাধছে। পরিবারের তিন সদস্য সুদেষ্ণা দে, রোমি দে আর প্রসূন দে- তিন জনের হাতেই রয়েছে কাটা দাগ। প্রতীক দে-র হাতে অস্পষ্ট কাটা দাগ রয়েছে। কিন্তু একমাত্র প্রণয়ের হাতেই নেই কাটা দাগ। এই কাটা দাগের রহস্যই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রণয় নিজে দাবি করেছেন, ভয়ে তিনি এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে নিজের হাত কাটতে পারেননি। প্রসূনের দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, 'ট্যাংরার দে পরিবারের তিন মহিলার খুনের ঘটনায় বাইরের কেউ জড়িত নন। দুই ভাই প্রণয় আর প্রসূন জড়িত রয়েছে।' পুলিশ সূত্রের খবর দে পরিবারের তিন মহিলা সদস্যকে খুন নিয়ে প্রণয় ও প্রসূন- দুই ভাইয়ের বয়ান নিয়েছে পুলিশ। তাতে কিছুটা অসঙ্গতি রয়েছে। তাই গোটা বিষয়টাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রণয়, প্রসূন আর প্রতীপ - দে পরিবারের তিন পুরুষ সদস্য এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। তিন জনের চিকিৎসা চলছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানিয়েছে, সুদেষ্ণা ও রোমির মৃত্যু হয়েছে হাত ও গলা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে। কিশোরীর মৃত্যু হয়েছিল বিষক্রিয়ায়। পুলিশেক একটি সূত্র বলছে, ঘুমন্ত অবস্থাতেই তাঁদের হাতের শিরা ও গলা কেটে দেওয়া হয়েছিল বলেও মনে করছে পুলিশ। প্রসূনের হাতে কাটা দাগ রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রণয় ঘুমের ওষুধ খেতেন। সেই ওষুধ পায়েসের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা চ্ছে। প্রণয় দাবি করেছেন, ঘউমের সময়ে তাঁর শ্বাসের সমস্যা হত। সে কারণ বিদেশ থেকে বিশেষ যন্ত্র এনে তা ব্যবহার করতেন। সেই যন্ত্রও মিলেছে বাড়িতে।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যা করবেন বলে পরিকল্পনা করেছিলেন প্রণয় এবং প্রসূন। ১২ ফেব্রুয়ারি দুই ভাই নিজেদের স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। স্বামীদের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন সুদেষ্ণা এবং রোমি। তবে প্রতীপ এবং প্রিয়ম্বদাকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। দে ভাইদের দাবি, বাচ্চাদের যাতে সন্দেহ না হয়, তাই ঘটনার দিন তিনেক আগে থেকেই পায়েস খাচ্ছিলেন দে পরিবারের সকলে। অরুচি কাটাতে পায়েসে তুলসীপাতা, নিমপাতা মেশানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১৭ তারিখ রাতে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়েছিলেন দে পরিবারের ছ’জন।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।