সংক্ষিপ্ত
তিহার জেল থেকে আসানসোল জেলে ফিরতে চেয়ে আবেদন। দিল্লির আদালতে আবেদন অনুব্রত মণ্ডলের।
দিল্লি থেকে বাংলায় ফিরতে চেয়ে আবেদন জানালেন তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডণ। গরু পাচার-কাণ্ডে বর্তমানে তিনি দিল্লির তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি নিজের রাজ্য আসানসোলের সংশোধনাগারে ফিরতে চান। আর সেই জন্যই দিল্লির একটি আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। বিশেষ জজ রঘুবীর সিং-এর কাছে আবেদনটি দায়ের করা হয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অনুব্রতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তারপর তাঁকে ২১ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিহার জেলে রয়েছেন অনুব্রত। অনুব্রতর আবেদনে জানান হয়েছে, 'যে উদ্দেশ্যের জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের আবেদন দাখিল করা হয়েছিল তা পুরণ করা হয়েছে। এখন অভিযুক্তকে ইডি হেফাজতে জেরা করা হয়েছে তারপরই আদালতে পেশ করা হয়েছে। এখন ইডির তেমন প্রয়োজন নেই। ' এই যুক্তি দেখিয়েই অনুব্রতকে আসানসোল সংশোধনাগারে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান হয়েছে। অনুব্রতর আইনজীবী মুদিত জৈন ও কুরণ কুমার গোগনার এই আবেদেন দাখিল করেছেন।
এই আবেদনে একই সঙ্গে আদালতের কথাও বলা হয়েছে। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারকের সামনে অনুব্রতর হাজিরা হওয়ার দিন আগামী ৩১ মার্চ। সেখানে তাঁর সশরীরে হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে। সিবিআই-এর চার্জশিট অনুযায়ী অনুব্রত ফৌজদারী মামলার মুখোমুখি হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে অনুব্রত সিবিআই মামলায় বিচারাধীন ছিলেন। সেখান থেকেই ইডি তাঁকে গ্রেফতার করে। নিয়ে যায় দিল্লিতে।
অনুব্রত মণ্ডলে তৃণমূলের দাপুটে নেতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যান্ত ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত। গরুপাচারকাণ্ড ও আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ইডি আর সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে । দুটে কেন্দ্রীয় সংস্থাই তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এই অবস্থায় তৃণমূলের নেত্রীর আস্থা অটুট রয়েছে কেষ্টর ওপর। সেই কারণে তাঁর অনুপস্থিতিতেও তাঁকে বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়নি। যদিও তৃণমূলের এই আচরণ তাঁকে প্রভাবশালী তকমা দিয়েছে।
গরুপাচার-কাণ্ডে দিল্লির রাউস অ্যাভেনেউ কোর্ট অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তারপর থেকেই তিহার জেলে ঠাঁই হয়েছে তৃণমূল নেতার। সূত্রের খবর সেখানে তাঁর জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। বাকি কয়েদিদের মতই রাখা হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশে চিকিৎসা আর ওষুধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্রের খবর তিহার জেলে অনুব্রতর সঙ্গে থাকা কোনও ওষুধ নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। সেখানেই চিকিৎসকদের মাধ্যমে প্রেসকিপশন দেখে তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সূত্রের খবর অনুব্রতকে রাখা হয়েছে জেলের ৭ নম্বর সেলে। কারণ এখানেই রাখা হয় টাকা পাচার-কাণ্ডে ধৃতদের। এই সেলেই রয়েছে গরুপাচার-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ও অনুব্রত মণ্ডলের সহযোগী সেহগল হোসেন। তবে প্রথম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে মশার উৎপাতে ঘুম হয়নি বলেও জেল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেছেন দাপুটে তৃণমূল নেতা।