সংক্ষিপ্ত
হাসপাতালের বাইরে শববাহী গাড়ির ভাড়া শুনে চোখ কপালে ওঠে রামপ্রসাদ দাওয়াতের। অবশেষে আর কোনও উপায় না থাকায় পৌষ মাসের শীতের মধ্যে মায়ের মৃতদেহ কাঁধে করেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন রামপ্রসাদ দাওয়াত।
দালাল চক্রের দাপটে জোটেনি শববাহী গাড়ি। মায়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়েই বাড়ির পথে রওনা দিল ছেলে। এমনই অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল জলপাইগুড়ি। মায়ের চিকিৎসায় ফুরিয়েছিল সব টাকা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই মৃত্যু হয় রামপ্রসাদ দাওয়াতের মা রক্ষী রানি দাওয়াতের। কিন্তু গোল বাধে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময়। হাসপাতালের বাইরে শববাহী গাড়ির ভাড়া শুনে চোখ কপালে ওঠে রামপ্রসাদ দাওয়াতের। অবশেষে আর কোনও উপায় না থাকায় পৌষ মাসের শীতের মধ্যে মায়ের মৃতদেহ কাঁধে করেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন রামপ্রসাদ দাওয়াত।
জলপাইগুড়ির ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা রামপ্রসাদ দাওয়াত। গত কয়েকদিন ধরেই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন রামপ্রসাদ দাওয়াতের ৭২ বছরের মা লক্ষী রানি দাওয়াত। বুধবার রাতে মৃত্যু হয় লক্ষী রানি দাওয়াতের। পরদিন সকালে মায়ের মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য শববাহী গাড়ির খোঁজ করতে যান রামপ্রসাদ। এই সময়েই দালাল চক্রের খপ্পরে পরেন তাঁরা। শববাহী গাড়ির জন্য তিন হাজার টাকা দাবি করা হয় তাঁদের কাছে। মায়ের চিকিৎসার পর এত টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করার সামর্থ ছিল না রামপ্রসাদের। অগত্যা মায়ের মৃতদেহ বাড়ি নিজেরাই বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। এক নিকট আত্মীয়ের সাহায্যে কম্বলে মায়ের মৃতদেহ মুড়িয়ে কাঁধে নিয়েই রাজডাঙার পথে রওনা হয় তাঁরা। পৌষ মাসের সকালে এই অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল গোটা জলপাইগুড়ি।
এই ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র রামপ্রসাদদের সাহায্যে এগিয়ে আসে গ্রীন জলপাইগুড়ি নামক একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে। অবশেষে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে শববাহী গাড়িতে মায়ের মৃতদেহ গ্রামে ফেরাতে সমর্থ হন রামপ্রসাদ দাওয়াত। কিন্তু জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কী ভাবে এত সক্রিয় দালাল চক্র? কাঁদের মদত পুষ্ট হয়ে এতটা বাড়বাড়ন্ত এই চক্রের? উঠছে প্রশ্ন।