Suvendu on Jagannath Temple: দীঘায় মহাধুমধাম। ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় দীঘায় পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধন। ওই দিনই প্রাণ প্রতিষ্ঠা।
Suvendu on Jagannath Temple: দীঘায় মহাধুমধাম। ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় দীঘায় পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধন। ওই দিনই প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee News)। সেই উপলক্ষে এখন থেকেই দীঘা (Digha) জুড়ে সাজসাজ রব। চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। রাজ্য সরকারের এই মেগা ইভেন্টে কারা কারা আমন্ত্রিত সেই তালিকা ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছে অতিথিদের কাছে। নিমন্ত্রণ পেয়েছেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
রাজ্য সরকারের (West Bengal News) তরফে নিমন্ত্রণ পেয়ে শুভেন্দু অবশ্য সাফ জানিয়েছেন দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধনে তিনি সানন্দে যেতে পারেন। কিন্তু তার আগে রাজ্য সরকার তথা প্রাক্তন আমলা হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে কতগুলি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সেই প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর পেলে তবেই তিনি দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সামিল হবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজ্যের তরফে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁকে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন IAS অফিসার হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বর্তমানে তিনি হিডকোর (Hidco) ভাইস চেয়ারম্যান।
দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজ্যের তরফে আমন্ত্রণ পত্র পেয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ''ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউজিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের টেন্ডার ডকুমেন্টসে দেখা গিয়েছে, দীঘাতে জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে? আপনি প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আপনি কি আমায় একটু ব্যাখা করে দেবেন যে জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র উদ্বোধন হবে নাকি জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে? আপনি আমন্ত্রণপত্রটা আবার ছাপাতে পারেন। আপনি আমায় একটু জবাব দিতে পারবেন এটা মন্দির নাকি কালচারাল সেন্টার।''
''হিডকোর চেয়ারম্যান কে? ওয়েবসাইটে দেখলাম জনাব ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু আমন্ত্রণপত্রে তাঁর নাম নেই কেন? ফিরহাদ হাকিম জগন্নাথধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র নাকি জগন্নাথ মন্দির কীসের সঙ্গে যুক্ত? কিছু মিডিয়া বলছে ফিরহাদকে সরানো হয়েছে চেয়ারম্যান পদ থেকে তাহলে ওয়েবসাইটে কেন এখনও তাঁর নাম?''
'''আগামী দিনে যে দান আসবে তা মন্দিরের সম্পদ হবে নাকি হিডকোর আয়ের উৎসব হবে এটি?''
''এই সাইটের কর্মী কারা নিয়োগ করবে? অহিন্দুদেরও কি নিয়োগ করা হবে?''
''এটাকে পুরীর জগন্নাথ ধামের মডেল হিসাবে বলা হচ্ছে। তাহলে এখানে কি অহিন্দুদের প্রবেশকে নিষিদ্ধ করা হবে পুরীর মতো?''
''আমার বিশ্বাস আপনি এই অস্বচ্ছতাগুলির জবাব দেবেন। না হলে ধরে নেব আপনি ও আপনার সরকার কোটি কোটি হিন্দুদের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করছেন।''
অন্যদিকে, আগামী ৩০ এপ্রিল মন্দির উদ্বোধন ও জগন্নাথের প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার আগের দিন আয়োজন করা হয়েছে যজ্ঞের। ওই দুই দিন মন্দির সেজে উঠবে আলোকমালায়। শুধু মন্দির চত্বর নয়, সেজে উঠেছে দীঘাও। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে গড়া হয়েছে দীঘার জগন্নাথ মন্দির। ফলে পরিকল্পনা এবং অন্যান্য আবহে পুরীর মতোই করা হচ্ছে তাকে। পোশাকি ভাবে বলা হচ্ছে ‘জগন্নাথধাম’। সেখানে পুরীর মন্দির চত্বরের মতোই চত্বর গড়ে তোলা হয়েছে। থাকছে জগন্নাথের মাসির বাড়িও।
রথের সময়ে পুরীর মন্দিরের সামনের রাস্তা সোনার ঝাড়ু দিয়ে ঝাঁট দেওয়া হয়। দীঘাতেও তেমনই হবে। সেই সোনার ঝাড়ুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ৫ লক্ষ ১ টাকা দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৯ তারিখে চার-পাঁচ ঘন্টা ধরে যজ্ঞ হবে। ৩০ তারিখে বেলা ১১টা নাগাদ হবে মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করবেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর সহযোগীরা। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুম্বইয়ের সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা গায়িকা অদিতি মুন্সি।
দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৮ সালে পুরীর সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির দীঘায় তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওল্ড দীঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথদেবের মাসির বাড়িতেই গোড়ায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ভাবনাচিন্তা করেছিল রাজ্য সরকার। পরে নিউ দীঘা স্টেশনের ধারে ভোগীবহ্মপুর মৌজায় মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। দীঘা উন্নয়ন পর্ষদের হাতে থাকা ২৫ একর জায়গা মন্দির নির্মাণের জন্য বেছে নেওয়া হয়। ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মন্দির তৈরির ঘোষণা করলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে নির্মাণকাজ শুরু হতে দেরি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ায় ২৫ একর জমিতে জগন্নাথধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের তরফে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে। খরচ হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
