সংক্ষিপ্ত

ভারতীয় জনতা পার্টির দাবি অনুযায়ী সেই তালিকা ক্ষতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই বিষয় চিঠি দেওয়া হয়েছে জেলা শাসকদেরও।

প্রায় পাঁচ হাজার বুথে পুননির্বাচনের দাবি বিজেপির। এই মর্মে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। এবার ভারতীয় জনতা পার্টির দাবি অনুযায়ী সেই তালিকা ক্ষতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই বিষয় চিঠি দেওয়া হয়েছে জেলা শাসকদেরও। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক পরের দিন ৯ জুলাই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। প্রায় পাঁচ হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে লেখা হয় ওই চিঠি। এর মধ্যে ঠিক কটি বুথে সত্যিই পুননির্বাচন হওয়া উচিত তা জেলাশাসকদের কাছে জানতে চেয়েছে কমিশন। তাঁদের সুপারিশ মতো রিপোর্টও জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনের ঘরে। উল্লেখ্য বিজেপি ছাড়াও নানা জায়গা থেকে এসেছে ভোট সংক্রান্ত হিংসার অভিযোগ। তাই এবার এই অভিযোগগুলো যাচাই করে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয় জেলাশাসকদের।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর্বে নজিরবিহীন সন্ত্রাসের সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। ঘটনার তদন্তে রাজ্যে এসেছে বিজেপির 'ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি'। সাংসদ রবিশংকর প্রসাদের নেতৃত্বে বাংলায় আসে এই তথ্য অনুসন্ধানকারী দল। হিঙ্গলগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকায় গিয়েছিলেন এই কমিটির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার এই মর্মে রাজ্যপালের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। এদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয় এই 'ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি'। রাজ্যে হিংসার পরিস্থিতি নিয়ে ঠিক কী বললেন তাঁরা?

রাজভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপি এই তথ্য অনুসন্ধান দলের নেতৃত্বে থাকা সাংসদ রবিশংকর প্রসাদ। তিনি বলেছেন,'প্রথমবার মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের মুখে অনুতাপ শোনা গেল। তবে শুধু অনুতপ্ত হলেই হবে না, হিংসা রুখতে পদক্ষেপও নিতে হবে। সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালকে গোটে বিষয়টা দেখতে বলেছি। যেখানে যেখানে হিংসার ঘটনা ঘটেছে সব ক্ষেত্রে যেন কঠোর পদক্ষেপ করা হয়, তা যেন উনি নিশ্চিত করেন।' এখানেই শেষ নয় রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন,'মমতার সরকারের আমলে কেউ কোনও অভিযোগ শোনে না। না পুলিশ মানুষের কথা শোনে, না প্রশাসন মানুষের কথা শোনে। সংবাদমাধ্যমে মৃত্যু নিয়ে সংখ্যা দেখাচ্ছে আমি তাতেই বিশ্বাসী। মমতার দেওয়া পরিসংখ্যান আমি বিশ্বাস করিনা। যাই ঘটনা ঘটে থাকুক, পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয়নি? এটাই রাজ্যপালকে বলতে এসেছি।'

উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান বলছে ২০তে ২০ হলেও বিরোধীশূন্য জেলা গড়ায় গতবারের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়েছে তৃণমূল। ২০১৮ সালে ১১টি জেলায় ১০০ আসনে জিতেছিল মমতার দল। সেবার পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদ স্তরে বিরোধীদের সম্মিলিত আসন ছিল ৩.৮ শতাংশের কাছেকাছি। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৮ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থাৎ বিরোধীদের সম্মিলিত আসন সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশের কাছাকাছি। ২০১৮ সালে বিরোধীশূন্য জেলার তালিকায় ছিল জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম। এবারও বিরোধীশূন্য দক্ষিণ দিনাজপুর এবং পশ্চিম বর্ধমান। এই তালিকায় এবার নাম জুড়েছে আলিপুর দুয়ারেরও। এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমানেও জেলা পরিষদে আসন পায়নি বিরোধীরা।