সংক্ষিপ্ত
ইতিমধ্যেই বিরোধীশূন্য তিনটি জেলা পরিষদ। এখনও পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ হয়নি ছ'টিতে। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া ফল বলছে একই পথে এগোচ্ছে এই ছ'টিও।
'টি ২০' জয় তৃণমূলের। যদিও এই 'টি'-এর অর্থ 'টোটাল' অর্থাৎ ২০-তে ২০ নিরঙ্কুশ জয়। এমনটাই বলছে ঘাসফুল শিবিরের একাংশ। ভোটের ফল বেরোতেই জনমত সমীক্ষার আন্দাজ আপত ভুল প্রমাণ হল। গণনার আগেও অন্তত চার-পাঁচটি জেলায় লড়াই কঠিন হবে বলেই মনে করছিল বিশেষজ্ঞরা। তবে বুধবার বিকেল পর্যন্ত হওয়া গণনা বলছে অন্য কথা। আবার ২০১৮-এর ইতিহাসেরই পূণরাবৃত্তি বাংলায়। প্রায় কটি জেলা পরিষদই তৃণমূলের দখলে। ইতিমধ্যেই বিরোধীশূন্য তিনটি জেলা পরিষদ। এখনও পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ হয়নি ছ'টিতে। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া ফল বলছে একই পথে এগোচ্ছে এই ছ'টিও।
বুধবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ফলপ্রকাশ হয়েছে মোট ন'টি জেলায়। সবকটিতেই জেলা পরিষদের আসনে জিতেছে তৃণমূল। এরমধ্যে আলিপুরদুয়ারে ১৮টি, দক্ষিণ দিনাজপুরের ২১টি এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের ১৮টি জেলা পরিষদের আসনে জয়ী হয়েছে ঘাসফুল শিবির। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদে ৮৫টি আসনের মধ্যে ৮৪টি জিতেছে তৃণমূল। হুগলির ৫৩-র মধ্যে ৫১টি, কোচবিহারে ৩৪টি আসনের মধ্যে ৩২টি। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১টিতে আইএসএফ এবং কোচবিহার ও হুগলি জেলা পরিষদে ২টি করে আসন পেয়েছে বিজেপি। পূর্ব মেদিনীপুরেও এগিয়ে তৃণমূল। ৭০টি আসনের ৫৬টিই পেয়েছে মমতার দল। ১৪টি বিজেপির দখলে। পুরুলিয়ার ৪৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৪২, বিজেপি ২ এবং নির্দল ১টি আসন পেয়েছে। মালদায় ৪৩টি আসনের ৩৩টিই পেয়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস ৬ এবং বিজেপি ৪টিতে জয়ী। দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এ পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল দ্বিস্তরীয় - গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে। জেলা পরিষদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা পাহাড়ের ক্ষেত্রে থাকে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (গিটিএ)-এর হাতে। এই স্বশাসিত সংস্থার পৃথক নির্বাচন হয়। রাজ্যের যে ২০টি জেলায় ত্রিস্তরীয় নির্বাচন হয়েছিল সেখানে জেলা পরিষদের মোট আসনসংখ্যা ৯২৮। ভোট হয়েছিল মোট ৯১২টি আসনে। ১৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল। এর মধ্যে কোচবিহারে ১টি, উত্তর দিনাজপুরে ৩টি, বীরভূমে ১টি, উত্তর ২৪ পরগনায় ৩টি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৮টি আসনে ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় ঘাসফুল শিবির। বাকি ৯১২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল শাসকদল।
তবে পরিসংখ্যান বলছে ২০তে ২০ হলেও বিরোধীশূন্য জেলা গড়ায় গতবারের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়েছে তৃণমূল। ২০১৮ সালে ১১টি জেলায় ১০০ আসনে জিতেছিল মমতার দল। সেবার পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদ স্তরে বিরোধীদের সম্মিলিত আসন ছিল ৩.৮ শতাংশের কাছেকাছি। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৮ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থাৎ বিরোধীদের সম্মিলিত আসন সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশের কাছাকাছি। ২০১৮ সালে বিরোধীশূন্য জেলার তালিকায় ছিল জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূম। এবারও বিরোধীশূন্য দক্ষিণ দিনাজপুর এবং পশ্চিম বর্ধমান। এই তালিকায় এবার নাম জুড়েছে আলিপুর দুয়ারেরও। এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমানেও জেলা পরিষদে আসন পায়নি বিরোধীরা।