সংক্ষিপ্ত

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় মৃত্যু হয়েছিল ৩১ জনের। খাতায়-কলমে মৃত্যুর সংখ্য়া ছিল ১৩। ২০১৮ সালের অসমর্থিত সূত্রে মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৫। খাতায়কলমে সেই সংখ্যা ছিল ১৪। তবে সব নজির ছাপিয়ে গেল ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন।

ভোট মিটলেও কিছুতেই থামছে না রক্তক্ষয়ী পর্যায়। গ্রাম দখলের লড়াই ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর রয়েছে বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস জোট। কিন্তু প্রাক্ নির্বাচন থেকে নির্বাচনের সময়, এমনকী ভোটগণনার দিনও বাংলায় জুড়ে চলে ব্যাপক হিংসা-রক্তলীলা। রাজ্যে অন্তত ৪৫ জন প্রাণ হারায়। এরপর সোমবার রাজ্যের ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হয়। ১১ জুলাই সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় গণনা। অশান্তির হাত থেকে রেহাই মেলেনি সেদিনও।

উল্লেখ্য তৃণমূল জমানার শুরু থেকেই ব্যাপক হিংসা দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে। অসমর্থিত সূত্রে খবর, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় মৃত্যু হয়েছিল ৩১ জনের। খাতায়-কলমে মৃত্যুর সংখ্য়া ছিল ১৩। ২০১৮ সালের অসমর্থিত সূত্রে মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৫। খাতায়কলমে সেই সংখ্যা ছিল ১৪। তবে সব নজির ছাপিয়ে গেল ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন। রাজ্য জুড়ে ভোট হিংসায় মৃত্যু বেড়ে ৪৫ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার মালদায় পিটিয়ে খুন করা হল কংগ্রেস কর্মীকে। অভিযোগের তির শাসকদল তৃণমূলের দিকে। ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার মাঝেই ফের রক্ত ঝড়ল রাজ্যে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার রাতুয়ায়। জানা যাচ্ছে বুধবার নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এই কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী রজিনা বিবি। এরপরই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজয় মিছিল বের করা হয়। চলে বাজি ফাটিয়ে উল্লাসও। অভিযোগ এই মিছিল চলাকালীন কংগ্রেসকর্মী ফটিকুল হকের বাড়ির সামনে বাজি ফাটাতে থাকে তৃণমূল কর্মীরা। এর থেকেই শুরু হয় বচসা।

সূত্রের খবর নিহত কংগ্রেসকর্মীর বাড়ির সামনে বাজি ফাটানোয় বাধা দেওয়া হলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বচসা বাধে ফটিকুল হক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এরপরই পিটিয়ে খুন করা হয় কংগ্রেস কর্মীকে। তাঁর পরিবারের লোকজনকেও মারধর করার অভিযোগ উঠছে। দিনেদুপুরে গুলি, বোমাবাজীর ঘটনায় উত্তপ্ত বাংলার একাধিক জেলা। সন্ত্রাসের ঘটনায় বারবারই নাম জড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূলের।

এদিকে, রাতভর সন্ত্রাসে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। বোমাবাজি আর গুলির লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত দুই আইএসএফ কর্মী -সহ মৃত্যু হয় দুই জনের। আহত হয়ে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি। অনেকের অবস্থা আশঙ্কা জনক। মঙ্গলবার গভীর রাতে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া এলাকা। পুলিশের সঙ্গে আইএসফ কর্মীদের দফা দফায় সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজি হয় , গুলি চলে। সেই সংঘর্ষের কারণে তিন জনের মৃত্যু হয়। বুধবার সকাল থেকেই এলাকায় পুলিশ টহল দিতে শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।

এখানেই শেষ নয়, ভোট গণনার দিন ব্যালট নিয়ে শুরু হয় তুলকালাম কান্ড। পঞ্চায়েত নির্বাচনের যত কাণ্ড যেন ব্যালট নিয়েই চলে। ভোটে জিততে, ব্যালট ছিনতাই। ব্যালটের ওপর কালি ছড়িয়ে দেওয়া। জল ঢেলে দেওয়া। ব্যালট পুকুরে ভাসিয়ে দেওয়া এমনকী ব্যালট পেপার খেয়ে ফেলার পর্যন্ত অভিযোগ ওঠে।