সংক্ষিপ্ত

আকারে প্রায় একটি বোতামের মতো। দেশে স্মার্ট সিটি তৈরির পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করবে বাঙালি বিজ্ঞানীর সৃষ্ট এই ক্ষুদ্রতম অ্যান্টেনা। 

ওয়ারলেস কমিউনিকেশনের জন্য পৃথিবীতে আজ থেকে প্রায় ২৪ বছর আগে আবিষ্কার হয়েছিল ব্লুটুথ। কোনও সংযোগ ছাড়াই ডিজিটাল ফাইল এক ডিভাইস থেকে আরেক ডিভাইসে আদান প্রদানের কাজে দেখা দিয়েছিল নব দিগন্ত। তারপর সেই প্রযুক্তির আরও উন্নতিসাধনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষণাগারে নিরন্তর প্রচেষ্টা চলতে থাকে। আরও গতিলাভ করেছে ব্লুটুথ প্রযুক্তি। এই উন্নতির মধ্যেই এবার বিশ্বের ক্ষুদ্রতম অ্যান্টেনা তৈরি করে সমগ্র বিশ্বে সাড়া ফেলে দিলেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী তথা রাঁচির মেশরার বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল। তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তাঁর এই আবিষ্কার এক নতুন পথের দিশারী হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই নবগঠিত অ্যান্টেনা শুধুমাত্র আকারেই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট, এমন নয়, ফাইল আদানপ্রদানের জন্য এই অ্যান্টেনা আগের ব্লুটুথের থেকেও কমপক্ষে একশো গুণ দ্রুত গতিতে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর। এর ফ্রিকোয়েন্সি ১.৮ গিগাহার্জ থেকে ১৮ গিগাহার্জ পর্যন্ত। তথ্য আদানপ্রদানের জন্য অ্যান্টেনাটিতে উচ্চমানের ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হয়েছে। আকারে ছোট হওয়ায় অনায়াসেই এই অ্যান্টেনা যুক্ত করা যাবে মোবাইল ফোন বা যে কোনও স্মার্ট যন্ত্রে। একশো মিটার এলাকার মধ্যে এটি প্রচণ্ড গতিতে কাজ করবে, দুটি বা তার অধিক যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হলে এই অ্যান্টেনা ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই চোখের নিমেষে আদানপ্রদান করতে পারবে বড় আকারের ফাইল বা ফোল্ডার। এটি একেবারে বোতামের মতো দেখতে এবং এর উৎপাদন খরচও অনেক কম হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীকান্ত পাল। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি বহুজাতিক সংস্থা তাঁকে বাণিজ্যিকভাবে অ্যান্টেনাটি উৎপাদন করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী।

সহযোগী মৃন্ময় চক্রবর্তীকে নিয়ে ২০১৩ সালে এই অ্যান্টেনা তৈরি করেন অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল। বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষণাগারে এই প্রযুক্তির কাজ চলেছিল। সম্প্রতি, ভারত সরকার এই অ্যান্টেনার পেটেন্ট প্রদান করেছে। শ্রীকান্তবাবুর দাবি, “আমার আবিষ্কার করা এই অ্যান্টেনা আগামী দিনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠবে। স্মার্ট সিটি তৈরির যে পরিকল্পনা দেশে প্রাথমিক ভাবে শুরু হয়েছে সেক্ষেত্রেও দিগন্ত খুলে দেবে এই অ্যান্টেনা।” তিনি জানান, “আমি নিশ্চিত এই অ্যান্টেনার বাণিজ্যিক উৎপাদন ও ব্যবহার শুরু হলে আগামী দিনে পৃথিবীতে ব্লুটুথ প্রযুক্তি আর থাকবে না।”

তবে এই প্রথম নয়, এর অনেক আগেই আমেরিকায় বিশ্বের বৃহত্তম টেলিস্কোপ হিসাবে পরিচিত নাসার গ্রিন ব্যান্ড টেলিস্কোপে সঙ্কেত গ্রহণ সংক্রান্ত দীর্ঘকালীন একটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে দিয়েছিলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী। পরবর্তীতে ব্রিটেনের জড্রেল ব্যাঙ্ক মানমন্দিরে থাকা টেলিস্কোপের জটিল যান্ত্রিক গোলযোগও সারিয়ে তুলেছিলেন অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল।


আরও পড়ুন-
তৃণমূল নেতা বোমা বাঁধতে গিয়ে মারা গেছেন: লিখলেন শুভেন্দু, ‘উনি জানেন কাঁথির জন্যই বোমা বাঁধা হচ্ছিল’, পালটা তোপ কুণালের
শুভেন্দু অধিকারীর সভার আগে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির প্রস্তুতি বানচালের প্রচেষ্টা, ‘তৃণমূল ভয় পেয়েছে’, খোঁচা শুভেন্দুর
মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কীসের ইঙ্গিত?