সংক্ষিপ্ত
অমর্ত্য সেনের অমর্যদার প্রতিবাদ। শান্তিনিকেতনে নাটক মঞ্চস্থ লেখক শিল্পিদের। একগুচ্ছ প্রতিবাদ কর্মসূচি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।
'অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত দিলে আমি যা দেব না, আমায় চেনে না'। মালদা থেকে ট্রেনে কলকাতা ফেরার পথে বোলপুর ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন মহিলাদের সামনে রাখুন। বঙ্গজননী ও পড়ুয়াদের সামনে রেখে আন্দোলনে সামিল হোন। ঘোষণা মোত্র শুক্রবার রবীন্দ্রভূমীতে রক্তকরবী মঞ্চস্থ মধ্য দিয়ে ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন অমর্যদার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়। কলকাতা থেকে চিত্র পরিচালক গৌতম হালাদার, অভিনেত্রী চৈতী ঘোষ সহ অনান্য শিল্পীর রক্তকর্বী মঞ্চস্থ করে প্রতিবাদ জানায়। শান্তিনিকেতন এখন যক্ষপুরী হয়ছে বলে দাবি করছেন শিল্পীরা।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে 'উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি'প্রতিবাদে মানববন্ধন ও নাটকের মধ্যদিয়ে প্রতিবাদ শান্তিনিকেতনে। এদিন 'প্রতীচী' বাড়ি সংলগ্ন মোড় থেকে বিশ্বভারতীর সমবায় ব্যাঙ্ক পর্যন্ত পদযাত্রা করেন 'সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটি'। পরে রাস্তার উপর 'রক্তকরবী' নাটক পরিবেশন করে প্রদিবাদ করেন অভিনেত্রীরা৷
পালটা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা আদালতকে মর্যাদা দিই। ম্যাজিস্ট্রেট অমর্ত্য সেনের প্রতীচী বাড়ির সামনে ১৪৫ ধারা জারি করেছে৷ তা এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি৷ সেই ধারা লঙ্ঘন করে কি করে এত মানুষ জমায়েত হয়ে কর্মসূচি করতে পারে? আইনকি শুধু বিশ্বভারতীর জন্যই?
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন৷ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই অভিযোগ নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বস্তরে৷ তবে প্রয়াত পিতা আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী উত্তরাধিকার সূত্রে জমি তাঁরই, দাবি করেন অমর্ত্য সেন৷ ইতিমধ্যেই এই মর্মে সিউড়ি জেলা আদালত ও কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অধ্যাপক সেন। হাইকোর্ট বিশ্বভারতীর জমি খালি করার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে৷
কিন্তু, দিনের পর দিন বিশ্ব বরেণ্য 'ভারতরত্ন' অমর্ত্য সেনকে 'জমি দখলকারী', 'জমি কব্জাকারী' প্রভৃতি শব্দে বলা এক প্রকার হেনস্থা ও অবমাননা। এই মর্মে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ভূমিকার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের মানুষজন৷।
এদিন, অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের হুঁশিয়ারির প্রতিবাদে প্রতীচী বাড়ি সংলগ্ন শিক্ষাভবন মোড় থেকে পদযাত্রা করেন 'সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটি'। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে নাট্যকর্মী, সমাজকর্মী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, শিক্ষাবিদেরা অংশ নেন মানববন্ধন কর্মসূচিতে৷ ছিলেন, শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকেরাও৷ উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা দিয়ে মিছিল শেষ হয় বিশ্বভারতীর সমবায় ব্যাঙ্কের কাছে৷ সেখানে রাস্তার উপর 'রক্তকরবী' নাটক মঞ্চস্থ করে প্রতিবাদ করেন নাট্যকর্মীরা।
এই কর্মসূচির আয়োজক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, "আর কোন উপায় ছিল না৷ কয়েকদিন ধরে যে ভাষায়, যে ভাবে, যে ভঙ্গিমায় শ্রদ্ধেয় অমর্ত্য সেনকে অপমান করছে তা মেনে নেওয়া যায় না। তাই প্রতিবাদে সামিল হয়েছি।"